কোচবিহার: কোচবিহারের জনসভা থেকে ঐক্যের ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মিলে মিশে কাজ করার আহ্বান জানালেন তিনি৷ তাঁর কথায় এই ঐক্যই জয়ের পথ তৈরি করে দেবে৷ এদিন তাঁর গলায় শোনা গেল রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের কবিতা৷ তাঁদের লেখনিতে ভর করেই বিরোধীদের বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
আরও পড়ুন- ‘আমার সভাপতিকেও ফোন মেরে দিচ্ছে, কী ভয়ঙ্কর এরা!’ বিজেপির পর্দাফাঁস মমতার
এদিন ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপানারা যদি হাঁটু জলে নামলে আমি মাথা পর্যন্ত জলে নামব৷ এর জন্য ডুবতে হলে প্রথমে আমিই ডুবব৷ আপনাদের ডুবতে দেব না৷’’ তবে কি দল ডুবলে তার দায়ভার নিজের কাঁঝেই নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি অবশ্য কবি নজরুল ইসলামের কবিতার লাইন তুলে বলেন, ‘‘দুর্গম গিরি কান্তার-মরু দুস্তর পারাবার, লঙ্ঘিতে হবে রাত্রি নিশীথে যাত্রীরা হুশিয়ার!’’ বাংলা বাঙালির ভাবাবেগকে উস্কে এ ভাবেই তার্ৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিয়ে গিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷
এদিন বিজেপি’কে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ইতিহাসের পথে হেঁটে তৃণমূল নেত্রী বলেন, যারা জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীকে খুন করেছিল তারা ওদের নেতা৷ কবি নজরুল লিখেছিলেন, ‘‘ ফাঁসির মঞ্চে গেয়ে গেল যারা জীবনের জয়গান, আসি অলক্ষ্যে দাঁড়াচ্ছে তারা, দিবে কোন বলিদান৷’’ বাংলার সংস্কৃতিতে ভর করে আদ্যপান্ত বাঙালি হয়েই এদিন বিজেপি’কে জবাব দিলেন তিনি৷ বাংলা জয়ের লক্ষ্যে এদিন তাঁর গলায় উঠে এসেছে রবীন্দ্রনাথের কবিতাও৷ বলেন পঞ্চানন বর্মার কথা৷ কোচবিহারের রানির কথা৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলি, ‘‘নাগিনীরা চারিদিকে ফেলিতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস৷ শান্তির ললিত বাণী শুনাইবে ব্যর্থ পরিহাস৷ বিদায় নেওয়ার আগে তাই ডাক দিয়ে যাই৷ দানবের সাথে যারা সংগ্রামের তরে প্রস্তুত হতেছে ঘরে ঘরে৷’ তাঁর কথায়, আসন্ন লড়াইয়ের জন্য মা, ভাই- বোনেরা প্রস্তুত হচ্ছে৷ শ্রমিক-কৃষক প্রস্তুত হচ্ছে৷ ছাত্র যৌবন প্রস্তুত হচ্ছে৷ রাজবংশী, কান্তাপুরী, হিন্দু, মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান সবাই তৈরি হচ্ছে৷ ভেদাভেদ ভুলে এদিন সমস্ত জাতিকে একই সূত্রে বাধার চেষ্টা করলেন তিনি৷
আরও পড়ুন- শুভেন্দু-রাজীবকে টেক্কা! গাইঘাটায় মমতার ছবি দিয়ে ‘দিদির ভক্ত’দের পোস্টার
সই সঙ্গে বিজেপি’র বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উত্তরবঙ্গে সংসদের সবকটা আসন পেয়ে পালিয়ে গিয়েছে৷ এই উত্তরবঙ্গই সবার আগে তাদের বিদায় জানাবে৷ একুশে যে সরকার আসবে, সে বাংলার, বাংলা মায়ের৷ ভারতবর্ষকে দিশা দেখাবে এই সরকার৷ আমারা হারতে পারি না৷ তিনি বলেন, ‘‘গতবার ভিতরে ভিতরে টাকা পয়সা নিয়ে যে কেলেঙ্কারিটা হয়েছিল সেটা বুঝতে পারিনি৷ কিন্তু এবার তা স্পষ্ট৷’’ এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আর্জি জানান তিনি৷ মমতা বলেন, আমাদের শপথ নিতে হবে সংগ্রামই আমাদের জীবন৷ তবে কোনও বিভেদ চলবে না৷ সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে৷ ভেদাভেদ নয় ঐক্য চাই৷ এই ঐক্যই আমাদের জেতাবে৷