শাসন: ফের উত্তপ্ত উত্তর চব্বিশ পরগনার শাসন। মেছোভেড়ির ইজারার টাকা জমা ও বিলিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার দুপুরে শাসন থানার বাদা গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা৷ চলল গুলি, বোমাবাজি৷
আরও পড়ুন- করোনায় আক্রান্ত, পরিবার সংক্রমিত হওয়ার ভয়ে বাড়িই ফিরলেন না প্রৌঢ়
এদিন দু'পক্ষের মধ্যে অবিরাম বোমাবাজি চলে বলে অভিযোগ৷ গুলিও চলে কয়েক রাউন্ড। এই ঘটনায় জখম হয়েছেন আট জন। বারাসতের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই ঘটনায় কোনও পক্ষই এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেনি। তবে গোলমালের খবর পাওয়ার পরই গ্রামে পুলিশ পাঠানো হয়।’’ পুলিশ গিয়েই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে৷ ঘটনার পর থেকেই থমথমে শাসন৷
শাসনের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি মাছের ভেড়িগুলি। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাসত ২ নম্বর ব্লকের শাসনের বাদা গ্রামে ছোট-বড় মিলিয়ে ১০টি ভেড়ি রয়েছে। মেছোভেড়ির চিংড়ি চাষের টাকার উপর অনেকটাই নির্ভরশীল গ্রামের অর্থনীতি৷ নিয়ম অনুযায়ী ভেড়ির মালিকেরা সেগুলি ইজারা দেন। গ্রাম কমিটিগুলি তার তদারকি করে। ইজারার টাকা কিস্তিতে জমা পড়ে। ইজারা প্রাপকেরা সেই টাকা গ্রাম কমিটির হাতে তুলে দেন। সেখান থেকে মালিকের প্রাপ্য মেটানোর পরে জমা পড়া টাকার বাকি অংশ গ্রামবাসীদের মধ্যে বণ্টন করা হয়। সেই টাকা নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শাসনের বাদা গ্রাম।
আরও পড়ুন- ফেসবুকে লাইভ করে আত্মঘাতী শিক্ষক, মৃত্যুর কারণ ঘিরে ধোঁয়াশা
জানা গিয়েছে, আগে থেকেই গ্রাম কমিটির বর্তমান সভাপতি বিশ্বনাথ মণ্ডল ও প্রাক্তন সভাপতি প্রবীর পাত্রের মধ্যে বিবাদ ছিল৷ শুক্রবার বাদা গ্রামের হাইস্কুলের মাঠে ভেড়ির ইজারার টাকা জমা ও বিলির বন্দোবস্ত করেছিল গ্রাম কমিটি। সেই সময় গ্রাম কমিটির প্রাক্তন সভাপতি প্রবীর পাত্রের দুই অনুগামী সেখানে উপস্থিত হয়৷ তাঁদের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি তোলেন বিশ্বনাথ মণ্ডল ও তাঁর দলবল। দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বচসা। মুহূর্তের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ, সেকেন্দার আলি ওরফে রাজু নামে এক ব্যক্তিকে মারধর করেন বিশ্বনাথ মণ্ডল৷ এর পরেই সেকেন্দার ও তাঁর সাগরেদরা বিশ্বনাথবাবুর উপর পালটা আঘাত হানে। দু'পক্ষের মধ্যে ইট ছোড়াছুড়ির মধ্যেই শুরু হয় ব্যাপক বোমাবাজি৷ কয়েক রাউন্ড গুলিও চালানো হয়৷ আহত হন দু'পক্ষের কমপক্ষে আট জন৷