কলকাতা: রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিতর্ক কিছুতেই থামছে না। কিছুদিন আগে পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কেন্দ্রের বৈঠকে যোগ না দেওয়ায় তাঁকে নিয়ে ব্যাপক হইহই সৃষ্টি হয়েছিল রাজ্যে তথা জাতীয় স্তরে। পরবর্তী ক্ষেত্রে তিনি মুখ্য সচিবের পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টা নিয়োগ করেন। এবার ফের একবার আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে সরগরম হতে চলেছে রাজ্য রাজনীতি। কারণ তাঁকে চিঠি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় কর্মিবর্গ মন্ত্রক।
জানা গিয়েছে, এই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মেজর পেনাল্টি প্রসেডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অল ইন্ডিয়া সার্ভিস রুলসের ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী তাঁকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে যদি তাঁর কোনো রকম বক্তব্য থাকে তাহলে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে না সেই ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তিনি সামনাসামনি উত্তর দিতে চাইলে সেটাও করতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে চরম হুঁশিয়ারি দিয়ে জানানো হয়েছে, যদি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে উত্তর না দেন তাহলে তাঁকে না জানিয়েই যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবসরের দিন ছিল ৩১ মে। তারপর তাঁকে দিল্লি তলব করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি আগেই অবসর নিয়ে নেন এবং দিল্লিও যাননি। পরবর্তী ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেন।
আরও পড়ুন: কার্শিয়াংয়ে রাজ্যপালকে কালো পতাকা, কনভয়ের সামনে বিক্ষোভ
প্রধানমন্ত্রীর ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ পরবর্তী রিভিউ মিটিং-এ উপস্থিত না থাকায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক৷ সেই চিঠির জবাব দিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্য সচিব তথা মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি জানিয়েছেন, ‘‘কলাইকুণ্ডায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলাম৷ আলোচনার পর প্রধানমন্ত্রীর হাতে রিপোর্ট তুলে দিয়ে তাঁর অনুমতিতেই বেরিয়ে আসি৷’’ পাশাপাশি তিনি এও জানান, ‘‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে কাজ করি৷ তাঁর নির্দেশ পালন করতে হয়৷ তাই তাঁর নির্দেশ মেনেই বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম৷ সরকারি কাজেই যেতে হয়েছিল৷’’ যদিও এই উত্তর যে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর কোনও প্রভাব ফেলেনি তা স্পষ্ট। এই ইস্যুতে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের তীব্রতর সমালোচনা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।