কলকাতা: নারদ মামলায় আজ অবশেষে ২ লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত বন্ডে ৪ নেতামন্ত্রীর অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাইকোর্ট৷ এছাড়াও বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে৷ বলা হয়েছে, এই মামলা বা অন্য কোনও পুরনো মামলা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না অভিযুক্তরা৷ যদিও চার অভিযুক্ত ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের তীব্র বিরোধিতা করেছিল সিবিআই৷ কিন্তু তাঁদের যুক্তি আদালতে খাটেনি৷
আরও পড়ুন- ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিপূরণের তালিকা ঘোষণা নবান্নের! মিলবে ৩০ হাজার টাকা
প্রসঙ্গত, নারদ মামলায় শুরু থেকেই আদালতের তীব্র প্রশ্নের মুখে পড়েছে সিবিআই৷ আজও বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ২০১৭ সাল থেকে এই মামলার শুরু হয়েছে৷ আপনারা তখন গ্রেফতার করেননি৷ তাঁরা তখনও প্রভাবশালী ছিলেন, এখনও প্রভাবশালী আছেন৷ তাহলে এখন প্রভাবশালীর তত্ত্ব খাড়া করা হচ্ছে কেন?
এর আগে হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে মামলা সরানো নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েছিল সিবিআই৷ বিচারপতি হরিশ ট্যন্ডন তুষার মেহেতাকে পাল্টা প্রশ্ন করেছিলেন, ডিভিশন বেঞ্চ চার হেভিওয়েট নেতাকে গৃহবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছিল। তার বিরোধিতা করেই কি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে তারা? বিচারপতি ট্যান্ডনের আরও বলেন, এত তাড়াহুড়ো করার কি কোনও প্রয়োজন ছিল? দীর্ঘ সময় ধরে মামলার তদন্ত করেছে সিবিআই। এমন কোন পরিবেশ বা পরিস্থিতি তৈরি হল যে রাতারাতি মামলা কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যেতে হল? পাশাপাশি কেন সিবিআই এই চার নেতামন্ত্রীর জামিনের বিরোধিতা নিয়ে বেশি ব্যস্ত, সেই প্রশ্নও তোলে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ৷
এছাড়াও নারদ মামলায় আদালতে বারবার প্রভাবশালী তত্ত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করেছিল সিবিআই৷ পাশাপাশি জনগণের চাপ ও মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নার বিষয়ও তুলে ধরেন৷ যার জবাবে বেঞ্চের প্রশ্ন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা সিবিআই তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে৷ এর জন্য আদালতের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছিলেন কি? পাশাপাশি বেঞ্চ জানায়, বহু হাই প্রোফাইল মামলায় মানুষের আবেগ কান্না জড়িয়ে থাকে। তাতে বিচারকরা প্রভাবিত হয়েছে কি? মামলা ভিন রাজ্যে হস্তান্তর নিয়েও আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে সিবিআই৷
আরও পড়ুন- কেন থাকবেন শুভেন্দু? কলাইকুণ্ডায় মোদীর সঙ্গে বৈঠক এড়াতে পারেন মমতা
এখানেই শেষ নয়৷ নারদ মামলার চার্জশিটে নাম থাকা মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ করা হল না সেই প্রশ্নও তোলে বৃহত্তর বেঞ্চ৷ তাদের প্রশ্ন, বিজেপি করে বলেই কি তাদের মামলায় রাখা হল না? সব মিলিয়ে নারদ মামলায় ব্যাকফুটেই সিবিআই৷ এমনকী সুপ্রিম কোর্টেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় তাদের৷