কলকাতা: গতকাল রাত থেকেই নতুন মোড় নিয়েছে নারদ মামলা৷ হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে সিবিআই৷ যদিও সোমবার নির্ধারিত সময়েই কলকাতা হাইকোর্টে শুরু হয় মামলার শুনানি৷ সওয়াল জবাবের সময় রীতিমতো হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় সিবিআইকে৷ তবে শেষমেষ আজও হল না চার হেভিওয়েট নেতার জামিনের শুনানি৷
আরও পড়ুন- নির্দিষ্ট সময়ের আগেই আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়! দেখুন যশের ভ্রূকুটি
এদিন শুনানির শুরুতেই সিবিআই-এর সলিসিটর জেলারেল তুষার মেহতা শুনানি পিছনোর আর্জি জানান৷ তিনি জানান, সিবিআই বিশেষ আবেদন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে৷ এর পরেই বিচারপতি হরিশ ট্যন্ডন তুষার মেহেতাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন, ডিভিশন বেঞ্চ চার হেভিওয়েট নেতাকে গৃহবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছিল। তার বিরোধিতা করেই কি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে তারা? বিচারপতি ট্যান্ডনের আরও বলেন, এত তাড়াহুড়ো করার কি কোনও প্রয়োজন ছিল? দীর্ঘ সময় ধরে মামলার তদন্ত করেছে সিবিআই। এমন কোন পরিবেশ বা পরিস্থিতি তৈরি হল যে রাতারাতি মামলা কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে যেতে হল? এছাড়াও আদালতের প্রশ্ন, দীর্ঘ সময় ধরে মামলার তদন্ত করছেন৷ তদন্তের শেষ পর্যায় আপনারা চার্জশিট জমা দেওয়ার দিন গ্রেফতার করলেন মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম ও সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। আপনারাতো তাদের জামিনের বিরোধিতা করতেই বেশি ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন৷ কেন?
এর পরেই সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতাকে প্রশ্ন করেন বিচারপতি সৌমেন সেন৷ তিনি বলেন, আপনারা মামলার তদন্ত অন্য রাজ্যে স্থানান্তরিত করার আবেদন জানিয়েছিলেন। তাহলে চার অভিযুক্ত কেন জামিনে মুক্তি পেতে পারে না? তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা সিবিআই তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ৷ আদলতের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছিলেন কি? এদিকে মধ্যরাতে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার বিষয়টি সকালে কেন জানানো হল, তা নিয়েও প্রশ্ন ছুড়ে দেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, জামিনের শুনানি তে হয়ইনি৷ একে রিট বলব? না পিটিশন? না কি অন্য কিছু? এদিন ঘূর্ণিঝড় যশ-এর প্রসঙ্গও উঠে আসে৷ বৃহত্তর বেঞ্চ সিবিআই-কে জানায়, প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে শুনানি সম্ভব হবে না৷ সেটাও মাথায় রাখা উচিত৷
আরও পড়ুন- আম্পানের চেয়েও ভয়ঙ্কর ছিল এই সাইক্লোন, জানুন ইতিহাস
পাশাপাশি উঠে আসে মামলা হস্তান্তর প্রসঙ্গও৷ তুষার মেহতা বলেন, নিজাম প্যালেসে সিবিআই দফতরে এত মানুষের একসঙ্গে জমায়েত হয়েছিল যে তদন্তকারি আধিকারিকরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। সেই কারণেই সংবিধানের ৪০৭নম্বর ধারা অনুযায়ী আমরা মামলাটি অন্য রাজ্যে স্থানাতরিত করার আবেদন জানিয়েছিলাম৷ তিনি আরও বলেন, ভিড়ের জন্যই অভিযুক্তদের আদালতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি৷ বরং ভার্চুয়াল শুনানি করতে হয়েছে৷ অন্যদিকে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে যে অভিযোগ করেছেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা তা সঠিক নয়৷