কলকাতা: ক্যান্সারের মতো মারণ রোগকে উপেক্ষা করে দিনের পর দিন পথে বসে আন্দোলন করেছেন তিনি৷ কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুরোধে অবশেষে ক্যানসার আক্রান্ত সোমা দাসকে চাকরির সুপারিশপত্র দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। নিজের জেলাতেই চাকরি দেওয়া হয়েছে তাঁকে। বীরভূমের নলহাটি-১ ব্লকের মধুরা হাই স্কুলে বাংলা পড়াবেন সোমা৷ দীর্ঘ লড়াইয়ের পর চাকরি পেয়েও খুশি নন তিনি৷
আরও পড়ুন- ‘হেরে গিয়েছেন তো কী হয়েছে, ঘর থেকে বের হন’, দলীয় কর্মীদের মন্ত্র মমতার
সোমা বলেন, “বিশ্বাস করুণ, আমি একেবারেই খুশি নই। যাঁরা প্রায় ৪৫০ দিন ধরে রাস্তায় বসে আন্দোলন করে চলেছে, তাঁদের সকলকে চাকরি দেওয়া হলে খুশি হতাম।” তাঁর কথায়, “আমাদের চাকরি চুরি করে অন্যায় ভাবে তা অন্যদের দেওয়া হয়েছে। এই চাকরি তো আমাদেরই প্রাপ্য৷ আমি সত্যি বলছি না মিথ্যা, তা এসএসসি-র চেয়ারম্যান আরও ভালো বলতে পারবেন। তালিকায় আমার নাম আগে থাকা সত্ত্বেও আমার জায়গায় অন্যকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।’’
সোমা জানান, প্রতিদিন একটু একটু করে অন্ধকারের অলতে তলিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি৷ সেই সময় তাঁর পাশে কেউ ছিল না। শান্তি পেয়েছিলেন এই আন্দোলনের মঞ্চে এসে। এঁরা তাঁর লড়াইয়ের সঙ্গী। তাঁর সঙ্গে যাঁরা এর সারিতে বসে আন্দোলন করে গিয়েছেন, তাঁদের সকলের চাকরি হলে তবেই খুশি হবেন তিনি৷ তবে বাকিরা চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন সোমা৷
বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা সোমা দাস রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত। সেই সমস্যা উপেক্ষা করেই ২০১৯ সাল থেকে রাস্তায় পড়ে থেকে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন। গত ১৩ এপ্রিল সোমাকে এজলাসে ডেকে পাঠান কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়৷ শিক্ষকতার বদলে তাঁকে অন্য চাকরি গ্রহণের প্রস্তাব দেন। কিন্তু সোমা সসম্মানে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁকে জানান, ভবিষ্যতে কোনও সরকারি স্কুলে শিক্ষকতার শূন্য পদ তৈরি হলে, সোমাকে সেখানে নিয়োগ দেওয়া হবে। এর পরই হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে সোমাকে স্কুলে চাকরির সুপারিশপত্র পাঠায় স্কুল সার্ভিস কমিশন।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>