কলকাতা: ফের একবার দলবদলের প্রবণতা? আবার অস্বস্তিতে পড়তে চলেছে রাজ্যের শাসক দল? বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাতে এই ইঙ্গিত মিলছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে তিনি ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে চান না। একই সঙ্গে এই ব্যাপারে ট্যুইট করে জানিয়েছেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দাবি করলেও আপাতত এই দাবিকে সেই ভাবে পাত্তা দিচ্ছে না রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
প্রার্থী না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে যে টুইট করেছেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় তাতে লেখা রয়েছে, “আগামী বিধানসভা নির্বাচনে আমার বয়স ও শারীরিক কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও এই বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছি। আমার প্রিয় বর্ধমান বাসীদের ধন্যবাদ জানাই ও তাঁদের কল্যাণ কামনা করি“। জানা গেছে গত ৩০ জানুয়ারি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি মারফত এ ব্যাপারে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। তবে সত্যিই কি অসুস্থতা নাকি এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে অন্য কোন ঘটনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যে তর্ক চলতে পারে। কারণ ২০১১ সালে নির্বাচনে জেতার পরে তাঁকে মন্ত্রী করা হলেও, ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে জেতার পর রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়কে মন্ত্রী করা হয়নি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের অনুমান, এই ঘটনার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে তাঁর। এখন দলবদল পরিস্থিতির আবহে হয়তো দলকে চাপে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি, মনে করছেন তারা।
আরও পড়ুন: এই কার্ডটি আছে? তাহলে মিলবে ২ লক্ষ টাকার বীমা, বড় ঘোষণা SBI এর
বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে দলবদল পরিস্থিতিতে বেশ ব্যাকফুটে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী এবং দলের সদস্য বিজেপিতে যোগদান করেছেন। এছাড়াও রয়েছেন একাধিক বিধায়ক এবং নেতা। তবে যারা দল বদল করেছেন তাদের গুরুত্ব দিতে রাজি নয় শাসক দল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে এও ঘোষণা করেছেন যে যারা দল ছেড়ে গিয়েছেন তাদের টিকিট দেওয়া হত না এমনিতেও। পাশাপাশি তারা ফিরে আসার চেষ্টা করলেও তাদের দলে নেওয়া হবে না। যদিও এইসব মন্তব্য দলের আভ্যন্তরীণ চাপ কমিয়ে দেবে না তা একেবারে নিশ্চিত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সে ক্ষেত্রে বর্ধমান দক্ষিণের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, মূলত যেখানে বিধানসভা নির্বাচনের আর কয়েকদিন বাকি।