গরু পাচার চক্র ভাঙতে তল্লাশি, সিবিআই-এর জালে বিএসএফ কর্তা ও তাঁর ছেলে

গরু পাচার চক্র ভাঙতে তল্লাশি, সিবিআই-এর জালে বিএসএফ কর্তা ও তাঁর ছেলে

কলকাতা: সরষের মধ্যেই রয়েছে ভূত৷ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে অবৈধ ভাবে গবাদি পশু পাচারের অভিযোগে এক বিএসএফ জওয়ান, তাঁর ছেলে ও আরও তিন অভিযুক্তের মামলা রুজু করল সিবিআই৷ এই পশু পাচার চক্রের মূল হোতা বিএসএফের কমান্ডান্ট পদমর্যাদার আধিকারিক সতীশ কুমার৷ বর্তমানে  রাইপুরে কর্মরত রয়েছেন তিনি৷ 

আরও পড়ুন- আধার কার্ডের ভুল সংশোধন করতে চান? সুখবর দিচ্ছে রাজ্যে! শুরু হচ্ছে পরিষেবা

বুধবার কলকাতা, মুর্শিদাবাদ, উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ, পঞ্জাবের অমৃতসর, ছত্তিশগড়ের রাইপুর সহ মোট ১৩টি জায়গায় তল্লাশি চালায় সিবিআই৷ সতীশের সল্টেকের বাড়িতেও তল্লাশি চলে।  বুধবার সন্ধ্যায় ওই বাড়ি সিল করে দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫-র ডিসেম্বর থেকে ২০১৭-র এপ্রিল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে বিএসএফের ৩৬ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডান্ট ছিলেন সতীশ কুমার। ওই ১৬ মাসে মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে পাচার হওয়া ২০ হাজার গরু বাজেয়াপ্ত করেছিল সতীশ কুমারের বাহিনী৷ কিন্তু সেই সময় পাচারকারীদের গ্রেফতার করা হয়নি৷ উপরন্তু  বাজেয়াপ্ত করা সেই গরুকেই বিএসএফের খাতায় বাছুর বলে উল্লেখ করা হয়। সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয় পাচারকারীদের৷ যাতে নিলামে কম দামে গরু কিনতে পারে তারা৷ এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নিলামে একটি পূর্ণবয়স্ক গরুর দাম যদি  ৬০ হাজার টাকা ওঠে, তবে বাছুরের দাম তার প্রায় অর্ধেক। সরকারি নথিতে বাজেয়াপ্ত গরুকগুলিকে বাছুর দেখিয়ে নিলামের সময় দাম কমানোর ব্যবস্থাটা করে দিতেন বিএসএফ আধিকারিকদের একাংশ। কম দামে সেই গরু কিনে ফের পাচার করা হত।’’ গুরু পিছু টাকা পেতে বিএসএফ এবং কাস্টমস৷ 

আরও পড়ুন- অনুব্রত’র দুর্গে সক্রিয় মাওবাদী সংগঠন? পারুইয়ে পোস্টার উদ্ধারে আতঙ্ক

এই গরু পাচার সিন্ডিকেটের মাথা হল এনামূল হক৷ এছাড়াও গরু পাচার কাণ্ডে সিবিআই-এর নজরে রয়েছে আনারুল শেখ এবং গুলাম মুস্তাফা৷ বিএসএফ ও কাস্টমস অফিসারদের সঙ্গে যোগ ছিল এদের৷ গরু পাচার সিন্ডিকেটের থেকে শুধু সতীশই নয়, লাভবান হয়েছে তাঁর ছেলে ভুবন ভাস্করও৷ ভুবন এনামুলের সংস্থা ‘মেসার্স হক ইন্ডাস্ট্রি’তে চাকরি করতেন বলেও খোঁজ পেয়েছে সিবিআই৷ 

বিএসএফ আধিকারিক সতীশ ছাড়াও বিএসএফের একাধিক অফিসার ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে খবর। গরু পাচার কাণ্ডে এনআইএ ও ইডি-কেও রিপোর্ট পাঠিয়েছে সিবিআই। গরু পাচার কাণ্ডে বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেনের বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে ইডি। অন্যদিকে, গরু পাচারের সঙ্গে কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে এনআইএ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − six =