কলকাতা: নজরে একুশের ভোট৷ বাংলা দখলে পাঁচ কেন্দ্রীয় নেতার বিশেষ দল গঠন বিজেপি’র৷ রাজ্যকে পাঁচটি জোনে ভাগ করে ভোট ময়দানে ঝাঁপাতে চলেছে গেরুয়া শিবির৷ আজ হেস্টিংসের অফিসে বসে ভোটযুদ্ধের রূপরেখাই তৈরি করে নিল বিজেপি৷
আরও পড়ুন- পাখির চোখ ২১-এর ভোট, কলকাতায় গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্ব
২১-এর ভোটকে পাখির চোখ করে এদিন বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব৷ বাংলাকে মোট পাঁচটি জোনে ভাগ করে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে৷ মেদিনীপুর জোনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতা তথা বিজেপি’র ত্রিপুরা জয়ের কান্ডারি সুনীল দেওধরকে৷ কর্ণাটকে দলের বিশেষ দায়িত্ব রয়েছেন তিনি৷ তাঁকে নিয়ে আসা হচ্ছে মেদিনীপুর জোনে৷ এই জোনে রয়েছে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া এবং হুগলী৷ রাঢ়বঙ্গ জোনের দায়িত্ব সঁপা হচ্ছে বিনোদ সোনকারকে৷ উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিবিদ ও কেন্দ্রীয় নেতা তিনি৷ এই জোনে রয়েছে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান৷ কলকাতা জোনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে দুষ্মন্ত কুমার গৌতমকে৷ বিজেপি’র সহসভাপতি ও হরিয়ানার এই নেতার কাঁধে রয়েছে কলকাতা জোন৷ এই জোনের মধ্যে রয়েছে কলকাতা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা ও উত্তর চব্বিশ পরগণার একাংশ৷ উত্তরবঙ্গের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হরিশ দ্বিবেদীকে৷ বিনোদ তাওড়েকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে নবদ্বীপ জোনের দায়িত্ব৷ নবদ্বীপ জোনে রয়েছে নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর চব্বিশ পরগণার একটা অংশ৷
জোন ভিত্তিতে দলীয় সংগঠন ঠিক কোন অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেটাই খতিয়ে দেখবেন এই পাঁচ নেতা৷ জোন ধরে এই ‘পঞ্চ পাণ্ডব’ ১৮, ১৯ এবং ২০ তারিখ, তিন দিন ধরে দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন৷ দফায় দফায় বৈঠকের পর রিপোর্ট পাঠানো হবে দিল্লিতে৷ জানা গিয়েছে, প্রথমেই তাঁরা বসবেন জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে৷ প্রথম দিন জেলা সভাপতি, পর্যবেক্ষক, সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্যদের নিয়ে বৈঠক হবে৷ পর দিন জেলাওয়াড়ি নেতৃত্বের সঙ্গে একাকী আলোচনা করবেন তাঁরা৷ আলোচনার ভিত্তিতে এই জোনগুলি কোন অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, সেই সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট তৈরি করবেন৷ এই রিপোর্ট খতিয়ে দেখবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ সূত্রের খবর, আগামী ৩০ নভেম্বর সম্ভবত ফের কলকাতায় আসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ৷ জোনগুলির পরিস্থিতি বোঝার পর আরও একবার রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি৷ তৈরি করবেন দলের রণকৌশল৷
আরও পড়ুন- বদ্ধ জীবনে হাঁফ ধরেছে, প্রেমের টানে প্রেমিকের হাত ধরে বাড়ি ছাড়ছে নাবালিকারা
২০১৯-এ লোকসভা ভোটে বিজেপি’র সাফল্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন বিস্তারকরা৷ দল, সংগঠন এবং ভোটার এই তিনের মধ্যে সমন্বয় সাধনের কাজ করেন যাঁরা, তাঁরাই হলেন বিস্তারক৷ এই বিস্তারকদের ফের ময়দানে নামানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল আজ৷ রাজ্য নেতৃত্ব এবার থেকে জেলায় জেলায় যেতে থাকবেন৷ জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি জেলাগুলির সঙ্গে সামঞ্জস্য সাধন করবেন৷ জেলা নেতৃত্ব যাবে মন্ডলে৷ মন্ডলের নেতারা যাবেন শক্তি কেন্দ্রে৷ আবার শক্তি কেন্দ্রের নেতারা যাবেন বুথে৷ এই ভাবে শৃঙ্খলার মধ্যে চলবে বিজেপি’র কর্মকাণ্ড৷
অন্যদিকে, আগামী ছ’মাস সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছেন বিজেপি’র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য৷ তাঁকে রাজ্যে সহকারি পর্যবেক্ষক হিসাবেও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ যে প্রচারযুদ্ধকে সামনে থেকে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দেবেন মালব্য৷
এদিন বৈঠকের পর দিলীপ ঘোষ জানান, বিভিন্ন মোর্চা বা বিভিন্ন স্তরের আন্দোলন, সাংগঠনিক কাজ সম্পর্কে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত একটি কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে এদিনেক বৈঠকে৷ মুকুল রায় বলেন, দলের পদাধিকারীদের সঙ্গে মত বিনিময় হল৷ জোন আগেও ছিল, এটা নতুন কিছু নয়৷