কলকাতা: আগামী কাল কলকাতার পাশাপাশি দেশজুড়ে পালিত হবে তৃণমূলের শহিদ দিবস৷ তারই পাল্টা পদক্ষেপে শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলী দিবল পালন করার ডাক দিল বিজেপি৷ এদিন সাংবাদিক বৈঠক ভোট পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে ফের সরব হন শমীক ভট্টাচার্য৷ সেই সময়ই বিজেপি’র এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন তিনি৷
আরও পড়ুন- অধিকারী পরিবারের আয়ের উৎস নিয়ে বিস্ফোরক প্রশ্ন তুললেন অখিল গিরি
শমীক বলেন, বিভিন্ন জেলার উপদ্রুত অঞ্চল থেকে এখনও ঘরছাড়া ২০ হাজার বিজেপি সমর্থক৷ দক্ষিণ কলকাতায় বিস্তীর্ণ এলাকায় ব্যাপক সন্ত্রাস চলছে৷ ২৯ তারিখ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের টিমকেও আক্রান্ত হতে হয়েছিল৷ কোথাও আবার বিজেপি কর্মীর হাতে জোড় করে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছে৷ সম্প্রতি যাদবপুরের এক তরুণী রেলে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন৷ তাঁর প্রকৃত মৃত্যুর কারণ এখনও অজানা৷ স্থানীয় মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি৷ সারা বাংলা জুড়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে৷ ন্যূনতম গণতান্ত্রিক পরিবেশ এখানে রক্ষা হয়নি৷ পুলিশ প্রশাসন নিষ্ক্রীয়৷
শমীকবাবু আরও বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল ঘরছাড়া মানুষদের রেশনের ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে৷ সেই নির্দেশ পালন করা হয়নি৷ প্রতিহিংসার বশে তাঁদের রেশন থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে৷ পুলিশ ও রাজনেতাদের যোগ সাজশে নিরপরাধ মানুষদের উপর অত্যাচার চালানো হয়েছে৷ রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল, যাঁদের ৭৭ জন বিধায়ক ও ১৮ জন সাংসদ রয়েছে, শুধুমাত্র তাদের ভোট দেওয়ার জন্য বহু গ্রাম আক্রান্ত হয়েছে৷ এই সমস্ত ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি’র সমস্ত সাংগঠনিক জেলার প্রচার চলবে৷
তিনি বলেন, মহাকরণ অবরোধকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলি চালানোর প্রতিবাদে দীর্ঘ দিন ধরে যুব কংগ্রেস আন্দোলন চালিয়ে এসেছে৷ ৩৪ বছরের সিপিএমের নিরবিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারতীয় জনতা পার্টি একটি প্রান্তিক শক্তি হিসাবে প্রথম থেকেই সেই আন্দোলনকে সমর্থন করেছে৷ কিন্তু যে দল গণতন্ত্রের পুনপ্রতিষ্ঠার স্লোগান দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছিল, যাঁরা অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের কথা বলেছিলেন, যাঁরা ভোটার তালিকা থেকে অনুপ্রবেশকারীদের নাম বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা বামেদের পথেই এগিয়ে চলেছে৷ যুব কংগ্রেসের আন্দোলনকে তারা হাইজ্যাক করেছে৷
আরও পড়ুন- ‘ভদ্রভাবে চলুন, মিথ্যা মামলা করবেন না’, এসপিকে হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর
তাঁর দাবি, এখনও পর্যন্ত ১২৪ জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে৷ ২ মে থেকে আজ পর্যন্ত ৩৮জন বিজেপি কর্মী খুন হয়েছেন৷ খুন করে মৃতদেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে৷ রাজ্যে আক্রান্ত মানুষ, বিপন্ন গণতন্ত্র৷ নিহতদের প্রতি সম্মান জানিয়েই পালিত হবে শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলী দিবস৷ আগামী কাল সকাল সাড়ে ১১টার সময় দিল্লির রাজঘাটে বিজেপি’র রাজ্যসভাপতি ও সাংসদ দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে অন্যান্য সাংসদরা ধরনায় বসবেন৷ হেস্টিংসের কার্যালয়ে দুপুর ২টো থেকে ৪টে পর্যন্ত পালিত হবে শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলী দিবস৷ উপস্থিত থাকবেন শুভেন্দু অধিকারী৷ প্রতিটি মণ্ডল ও বুথে ভার্চুয়ালি সকলকে এক জায়গায় নিয়ে আসা হবে৷ ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে গোটা বিশ্বের বাঙালির কাছে পশ্চিমবাংলার পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে৷