কলকাতা: বিজেপি রাজ্য সরকারের গত তিন বছরের আর্থিক খরচের হিসাব অডিট করার দাবি জানিয়েছে। দলের প্রবীণ বিধায়ক তথা অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী আজ বিধানসভায় চলতি অর্থ বছরের বাজেট প্রস্তাবের উপরে আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে আসল খরচের বিস্তর ফারাক রয়েছে বলে উল্লেখ করে কেন এই পার্থক্য তা জানতে অডিটর জেনারেলকে দিয়ে অডিট করার দাবি জানিয়েছেন।
এর পাশাপাশি, রাজ্যে বর্তমানে যে ৪৭ টি সরকারি প্রকল্প চলছে সেগুলির সুবিধাভোগী কারা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বিভিন্ন প্রকল্পে কত মানুষ সুবিধা পাচ্ছেন, কত টাকা খরচ হচ্ছে, কীভাবেই বা প্রকল্প গুলি চালানো হচ্ছে বাজেটে তার কোনো দিশা খুঁজে পাওয়া যায়নি বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। প্রকল্পগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকারের কত অনুদান রয়েছে বাজেটে তারও কোন উল্লেখ নেই বলে তিনি জানান। অন্যদিকে, রাজ্য সরকার ভিন রাজ্যে কর্মরত এখানকার এগারো শতাংশ পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারেনি বলে বিজেপির অপর বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী অভিযোগ করেছেন। গত মে মাস পর্যন্ত রাজ্যে ১৬ টি চটকল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ৫০ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়েছেন বলে দাবি তাঁর। আলোচনায় অন্যান্যদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের তাজমুল হোসেন, সমীর জানা, অপূর্ব সরকার পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ছাড়াও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নওশাদ সিদ্দিকী অংশ নেন। পরে ধ্বনি ভোটে বাজেট প্রস্তাব সভায় গৃহীত হয়।
আরও পড়ুন- সরকারি উপেক্ষা নিয়েই Indian Book of Records-এ পুরস্কৃত ‘শবর পিতা’
প্রসঙ্গত গতকাল বাজেট পেশের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট জানান, আগের অর্থবর্ষে ২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৬৭৭ কোটির বাজেট ছিল। ২০২১-২২ সালে তা বেড়ে ৩ লক্ষ ৮ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা হয়েছে। ২০.৭ শতাংশ বেড়েছে। তিনি জানান, ২০২০-২১ সালে বাংলার জন্য কেন্দ্র প্রায় ৫৮ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। কিন্তু পাওয়া গিয়েছে ৪৪ হাজার ৭৩৭ কোটি ১ লক্ষ টাকা। ১৪ হাজার ২২৫ কোটি ৫৪ লক্ষ কোটি টাকা কম পাওয়া গিয়েছে। এই প্রেক্ষিতেই তিনি কেন্দ্রকে তুলোধনা করে বলেন, ২০১৯-২০ সালেও রাজ্য বরাদ্দের ১১ হাজার কোটি টাকা পাওয়া যায়নি এখনও। রাজ্যের টাকা রাজ্যকে দেওয়া হয়নি। তাছাড়াও ৩৩ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা এখনও পাওনা বাকি কেন্দ্রের থেকে, বলে দাবি তাঁর।