কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সুপারিশে বিনা পরীক্ষায় কল্যাণী AIIMS-এ চাকরি বিধায়ক কন্যার, নালিশ শাহকে

কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সুপারিশে বিনা পরীক্ষায় কল্যাণী AIIMS-এ চাকরি বিধায়ক কন্যার, নালিশ শাহকে

কল্যাণী: এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য৷ নাম জড়িয়েছে হেভিওয়েট নেতা মন্ত্রীদের৷ এরই মধ্যে সামনে এল আরও এক নিয়োগ কেলেঙ্কারি৷ ‘বর্তমান’ পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, কেন্দ্রের সুপারিশে বিনা পরীক্ষায় কল্যাণী এইমসে নিয়োগ পেলেন বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার কন্যা মৈত্রী দানা৷ 

আরও পড়ুন- প্রেয়সীর সঙ্গে দেখা করতে কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতে অনু্প্রবেশ, BSF-এর চোখে পড়তেই…

কল্যাণী এইমসের নার্সিং কলেজে ডেটা এন্ট্রি অপারেটর বা ডিইও পদে নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে মিনিটে ৩৬ শব্দ টাইপের পরীক্ষাও নেওয়া হয়। এই পদে মাসিক বেতন প্রায় ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু অভিযোগ, কোনও পরীক্ষাই দেননি বিধায়ক-কন্যা মৈত্রী দানা। বদলে ১ এপ্রিল থেকে এই কেন্দ্রীয় হাসপাতালে সরাসরি কাজে যোগ দেন তিনি। কিন্তু কী ভাবে? অভিযোগ, প্রথম কারণ হল তিনি বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার মেয়ে। দ্বিতীয়ত, তাঁর জন্য সুপারিশ এসেছিল কেন্দ্রীয় শিক্ষা রাষ্ট্রমন্ত্রী সুভাষ সরকারের কাছ থেকে৷

এর আগে স্থানীয় যুবক-যুবতীদের চাকরির দাবিতে এইমসে বিক্ষোভ হয়েছে৷ এই অবস্থায় চাকরির পরীক্ষা না দিয়েই সুপারিশের ভিত্তিতে বিধায়ক-কন্যার কাজে যোগ দেওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারেননি দলীয় কর্মীরাই৷ নালিশ জানিয়ে সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে চিঠি পাঠান বিজেপি কর্মী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ 

তাঁর দাবি, ‘দলের রাজ্য কমিটির সদস্য দীপা বিশ্বাসের মাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ঘনিষ্ঠজনদের চাকরি পাইয়ে দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। অথচ গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে রাজ্যে খুন হওয়া শয়ে শয়ে বিজেপি কর্মীর পরিবারের একজন সদস্যকেও চাকরি দেওয়া হয়নি। যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন।’  পরীক্ষা ছাড়াই কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে বিজেপির স্বজনপোষণের ঘটনায় ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন বিজেপি’র কর্মীরাই৷ 

যদিও দলের অন্দরে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ ফুৎকারে উড়েয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা— প্রধানমন্ত্রীর এই নীতিতেই আমি বিশ্বাসী।’ সুভাষের দাবি, তাঁর সুপারিশে নয়, মৈত্রী দানার চাকরি হয়েছে দলবদলু এক প্রভাবশালী বিজেপি নেতার মাধ্যমে৷ তবে কল্যাণী এইমসে চাকরি দেওয়া নিয়ে যে বিজেপি’র অন্দরে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছেন সুভাষ। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই বিষয়টি দেখছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

কল্যাণী এইমসের ডিরেক্টর রামজি সিং বক্তব্য, ‘চাকরি দেওয়ার জন্য নানা অনুরোধ আসতেই থাকে। আমরা নিয়ম মেনেই নিয়োগ করি৷ তবে বিধায়ক কন্যা কী ভাবে চাকরি পেয়েছেন, তা বলতে পারব না।’ এ বিষয়ে বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানার কোনও প্রতিক্রিয়াও জানা যায়নি৷  কোনও জবাব দেননি মৈত্রী দানও৷ 

এমতাবস্থায় দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘চাকরির নিয়োগ নিয়ে এই ধরনের অভিযোগ বাঞ্ছনীয় নয়। উপযুক্ত তথ্য-প্রমাণ থাকলে, অভিযোগের ভিত্তিতে নিশ্চই তদন্ত করে দেখা হবে।’’