কলকাতা: দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশ বিভুঁই৷ ঝড় তুলেছে বীরভূমের ‘বাদাম কাকু’ ভুবন বাদ্যকরের কাঁচা বাদাম৷ এই গানের দৌলতেই রাতারাতি জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছান দুবরাজপুর ব্লকের অন্তর্গত লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত গ্রাম কুড়ালজুড়ির বাসিন্দা ভুবন৷ পরিচিতি মেলার পর তাঁকে দেখা গিয়েছে কলকাতায় তৃণমূলের প্রচারে৷ ডাকা এসেছে একের পর এক অনুষ্ঠানের৷ তিনি যেখানেই গিয়েছেন, উপচে পড়েছে মানুষের ভিড়৷ কিন্তু জোটেনি প্রাপ্য অর্থ৷ এমনকী ভাইরাল হওয়া গান থেকেও প্রাপ্য পাননি ভুবন৷ তাই এক রাশ আক্ষেপ নিয়ে ভুবনের গলায় তাই ঝরে পড়ল-‘এমন মানুষ পেলাম নারে, যে আমায় ব্যাথা দিল না৷’
আরও পড়ুন- দলীয় কোন্দলের চাপ? বিধায়কদের নিয়ে ‘গোপন’ বৈঠক শুভেন্দুর
অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার৷ পেট বাঁচাতে গ্রামের পথে বাদাম বিক্রি করতেন ভুবন৷ বাদাম বেঁচতে বেঁচতেই তৈরি করেন ‘কাঁচা বাদাম’৷ যা নেট পাড়ায় শোরগোল ফেলে দেয়৷ এর পর স্টুডিয়োয় দাঁড়িয়ে সেই গান রেকর্ডও করেন তিনি৷ কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস! খ্যাতি এলেও ধরা দেয়নি অর্থ৷ ভুবন বাদ্যকরের দাদা জগাই বাদ্যকর বলেন, একজন নিজেকে রেলের ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিয়ে বলেছিলেন, বলেছিলেন পাকা বাড়ি করে দেবেন৷ পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন৷ কিন্তু তিনি এখন ফোনই ধরছেন না৷ জগাই আরও বলেন, অনুষ্ঠান করলে ৫ হাজার টাকা দেবে বলেছিল, কিন্তু ৫ পয়সাও দেয়নি৷ গরিবের পেটে এই ভাবে লাথি মারা হচ্ছে৷ তাঁর কথায়, চারচাকা গাড়ি, বাইক সব দেবে বলেও কিছু দেওয়া হয়নি৷ টিভিটে গাড়ি দেখানো পর্যন্ত হয়েছিল৷ কিন্তু কিছুই এসে পৌঁছয়নি৷
ভুবন বাদ্যকরের বাড়ি দেখলে চোখে জল আসে৷ কাঁচা মাটির দেওয়াল৷ উপরে খড়ের চালা৷ জল থেকে বাঁচতে কালো প্লাস্টিক দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে সেই চালা ঘর৷ সেখানেই থাকে দুই ভাইয়ের পরিবার৷ সরকার বাড়ি তৈরি করে দেবে বলেছিল৷ তা অর্ধেক হয়ে পড়ে রয়েছে৷ জগাই বাদ্যকর জানান, তাঁদের উপার্জন সেই অর্থে নেই৷ হাজিরা খেটে দিনে ২০০ টাকা মেলে৷ তা দিয়েই সংসার চলে৷
সম্প্রতি ভুবন বাদ্যকরের কাঁচা বাদাম গানের সঙ্গে নেচে ঝড় তুলেছেন সোশ্যাল মিডিয়া সেনশেসন তানজিনিয়ার যুবক কিলি পল৷ তার হাত ধরে পূর্ব আফ্রিকাতেও সুপারহিট ভুবন৷ ভুবনজোড়া খ্যাতি্র পরেও শূন্য হাতে ফিরছেন ‘বাদাম কাকু’ ভুবন!