রাজনীতির ‘খেলা’য় মিলে যাচ্ছে বাংলা-ত্রিপুরা, শাসকের মুখোশে ‘একই মুদ্রার দুই পিঠ’?

রাজনীতির ‘খেলা’য় মিলে যাচ্ছে বাংলা-ত্রিপুরা, শাসকের মুখোশে ‘একই মুদ্রার দুই পিঠ’?

কলকাতা:  বিপুল জনাদেশ নিয়ে বাংলায় তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূলের পাখির চোখ এখন ত্রিপুরা৷ ভোটের আগে বাংলা দখলে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব যে ভাবে দিল্লি থেকে ‘ডেইলি প্যাসেঞ্জারি’ করেছিলেন, ঠিক সেই ভাবেই ত্রিপুরায় ডেইলি প্যাসেঞ্জারি শুরু করেছে তণমূল৷ উভয়েরই দাবি এক, ‘গণতন্ত্র রক্ষা’!

আরও পড়ুন- দাবি মানল কর্তৃপক্ষ, ধর্মঘট প্রত্যাহার ট্যাঙ্কার্স অ্যাসোসিয়েশনের

বাংলায় এসে গণতন্ত্র রক্ষার জিগির তুলেছিল বিজেপি৷  এ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল৷ এমনকী পুলিশ-প্রশাসনের রাজনীতিকরণের অভিযোগও তোলে হয়েছিল৷ সোমবার বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাড়ির উপর হামলার পর ত্রিপুরার গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক৷  আজ আক্রান্ত হলেন দেবাংশু, সুদীপ রাহারা৷  কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ সেখানে নীরব দর্শক৷  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি, ত্রিপুরায় বিপ্লব দেব সরকারের পুলিশের বিরুদ্ধে এবার সেই অভিযোগ তুলল তৃণমূল৷ অভিযোগ, ‘দলদাস পুলিশ’। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গিয়েছে এই নেতাদের রাজনৈতিক অবস্থান৷ বাংলা জয়ের পর আপাতত  সর্বশক্তি নিয়ে ত্রিপুরা জয়ে নামার প্রস্তুতি শুরু করেছে তৃণমূল৷ আর গদি বাঁচাতে মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছে বিজেপি৷

প্রসঙ্গত, এদিনের ঘটনায় শাসক দলের বিরুদ্ধেই হামলা চালানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে। অভিযোগ, বিরোধী নেতাদের গাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিজেপি’র কর্মী সমর্থকরাই৷ ভোটের আগে ডায়মন্ডহারবারে প্রায় একই ভাবে ইঁট ছোড়া হয়েছিল জেপি নাড্ডার গাড়িতে৷ আক্রান্ত হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষও৷ তখন কাঠগড়ায় তোলা হয়েছিল তৃণমূল সরকারকে৷ স্লোগান উঠেছিল ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’৷ রাজনীতির স্রোত প্রবাহে কোথায় যেন মিলে মিশে একাকার বাংলা আর ত্রিপুরা৷ শুধু বদলে গিয়েছে ‘রাজনৈতিক নাটকে’র রঙ্গমঞ্চ৷  ঘটনাস্থল, কখনও বাংলা, এখন ত্রিপুরা।

আরও পড়ুন- জবর দখলদারি রেল কোয়ার্টার উচ্ছেদ ঘিরে তীব্র উত্তেজনা ইছাপুরে

বাংলায় সাম্রাজ্য দখলে বিজেপি’র রথ রুখে দিয়েছে তৃণমূল। এবার ত্রিপুরার রাজ্যপাট দখলে তৃণমূলের অভিযান রুখতে পারবে কি বিজেপি? উত্তর লুকিয়ে সময়ের গর্ভে৷ তবে বাংলা ভোটে রণক্ষেত্রে যে রূপ দেখা গিয়েছিল, তারই যেন পুনরাবৃত্তি ঘটতে শুরু করেছে ত্রিপুরায়৷ এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুবার আক্রান্ত তৃণমূল৷ নিশানায় শাসকদল বিজেপি৷ কবে কি আক্রমণ আর আক্রান্তের প্রেক্ষাপট বদলে যাচ্ছে শাসক দলের মুখোশের আড়ালে? নাকি বিরোধী রাজনীতির অংশ হলেই আক্রমণ? সেটা বাংলায় তৃণমূল হোক কিংবা ত্রিপুরায় বিজেপি৷ সব শাসকের চেহারাই কি এক? ‘একই মুদ্রার দুই পিঠ’? 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *