এশিয়ার প্রথম সাঁতারু হিসেবে মলোকাই চ্যানেল জয় বাংলার জলকন্যার, ইতিহাস গড়লেন সায়নী

এশিয়ার প্রথম সাঁতারু হিসেবে মলোকাই চ্যানেল জয় বাংলার জলকন্যার, ইতিহাস গড়লেন সায়নী

কলকাতা: ইংলিশ চ্যানেল পাড় করেছিলেন আগেই৷ এবার মার্কিন মুলুকের মলোকাই চ্যানেল জয় করে ইতিহাস লিখলেন বাংলার সাঁতারু সায়নী দাস। শুধু ভারত নয়, এশিয়া মহাদেশের প্রথম মহিলা হিসাবে বিখ্যাত মলোকাই চ্যানেল জয়ের নজির গড়লেন কালনার  মেয়ে৷ সেই সঙ্গে উজ্জ্বল করলেন দেশের নাম৷ মলোকাই চ্যানেল জয় করার পরেই দু’হাতে তুলে ধরেন ভারতের পতাকা৷ 

আরও পড়ুন- খাট ভেঙে পড়ে গেলেন শুভেন্দু, ময়নাগুড়িতে অল্পের জন্য রক্ষা

মহিলা সাঁতারু হিসাবে চারটি চ্যানেল জয়ের কৃতিত্ব এখন সায়নীর ঝুলিতে৷ মেয়ের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা পরিবার৷ সায়নীর বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের কালনা শহরের বারুইপাড়ায়। খুব অল্প বয়সেই বাবার হাত ধরে সাঁতারে হাতেখড়ি তাঁর৷ এরপর  কঠিন অনুশীলন আর পরিশ্রমের মধ্যে দিয়ে নিজেকে একটু একটু করে গড়ে তুলেছেন সায়নী৷ রটনেস্ট ও ক্যাটলিনা চ্যানেল জয়ের কৃতিত্ব অর্জনের পর ২০১৭ সালে ইংলিশ চ্যানেল জয় করেন তিনি। এর পর তাঁর লক্ষ্য ছিল মলোকাই চ্যানেল৷ সেই লক্ষ্য পূরণ করে ইতিহাসের নয়া অধ্যায় লিখলেন বঙ্গতনয়া৷

সায়নী

কোচ রাধেশ্যাম দাস জানান, মলোকাই চ্যানেল জয়ের স্বপ্ন দু’চোখে নিয়ে টানা দু’বছর কঠিন অনুশীলন করেছেন সায়নী। গত ২৯ মার্চ  সায়নীকে নিয়ে তিনি পাড়ি দেন আমেরিকা৷ কথা ছিল, এপ্রিলের প্রথম দু’সপ্তাহের মধ্যেই জলে নামবেন সায়নী৷ কিন্তু বাধ সাধল খারাপ আবহাওয়া৷ নির্দিষ্ট সময়ে মলোকাইয়ের জলে নামতে পারলেন না। কারণ তখন হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিমি৷ হাওয়ার দাপটে জলের ঢেউ ২ মিটারের উপরে উঠে যায়৷ ফলে তখন মলোকাইয়ের জলে নামা ছিল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ৷ অগত্যা ভালো আবহাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয় সায়নীকে৷ পাইলটও সেই পরামর্শই দেন৷ এর আগে ইংলিশ চ্যানেল পাড় করার সময় একই ধরনের প্রতিকূল আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে হয়েছিল বাংলার এই সাঁতারুকে৷

রাধেশ্যাম বলেন, “প্রতিকূল আবহাওয়া সায়নী মলোকাইয়ের জলে নামতে পারেননি ঠিকই, তবে অনুশীলন থামাননি৷ আমেরিকার হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে টানা বাইশ দিন ধরে চলে তাঁর কঠিন অনুশীলন৷” তিনি আরও জানান, মলোকাই চ্যানেল সুইমিং সংস্থার সভাপতি বিল গোডিং নিজে দায়িত্ব নিয়ে সায়নীকে অনুশীলন করান। অন্যদিক, আবহাওয়ার গতিপ্রকৃতির উপর কড়া নজর রাখছিলেন পাইলট ম্যাথিউ বাকম্যান৷ অবশেষে আসে সেই দিন৷ ২৮ এপ্রিল ভারতীয় সময় সকাল ১০টা নাগাদ মলোকাইয়ের জলে নামেন সায়নী। তার পর টানা ১৯ ঘণ্টার বেশি সাঁতার কেটে মলোকাই চ্যানেল জয় করে নেন বঙ্গতনয়া। স্বপ্ন পূরণে দারুণ খুশি সায়নী৷