কলকাতা: রামপুরহাট মামলার শুনানিতে এদিনও উত্তাপ বহাল থাকল কলকাতা হাইকোর্টে। আজ আরও একধাপ এগিয়ে রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তোলা হল বিরোধী পক্ষের তরফ থেকে। তবে রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন।
আরও পড়ুন- ‘আমাদেরই লোককে খুন করিয়ে বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা, সহ্য করব না’
এদিন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ তোলেন, আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও এখনো সিসিটিভি লাগানো হয়নি। যেখানে তদন্ত চলছে, সেখানে মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যে প্যাকেজ ঘোষণা করে দিলেন, এটা সঠিক নয়। তাঁর কথায়, এর ফলে তদন্ত বিঘ্নিত হতে পারে। অর্থাৎ তাঁর নিশানায় ছিলেন সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, আইনজীবী শামিম আহমেদ বলেন, মিহির লাল শেখ, যার আত্মীয় মারা গিয়েছে, তিনি তাদের বলেছেন যে, রাত ৮.৩০ উপপ্রধান খুন হন। রাত ন’টা নাগাদ সমর্থকদের থানা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছিল। ৫০০ মিটারের মধ্যে রামপুরহাট পুলিশ স্টেশন থাকলেও তাদের ফোনে জানানো সত্ত্বেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। এখনো পর্যন্ত তার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়নি। এদিকে আবার বড় দাবি করেছেন তিনি। বলেন, এই ঘটনার পেছনে প্রকৃত কারণ হচ্ছে অবৈধ বালি খাদান ও পাথর খাদানে তোলাবাজি। এলাকার দখল নিয়ে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তার থেকে এই ঘটনা।
একই রকম সুর আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্যের। তাঁর কথায়, ভাদু শেখের মৃত্যুর পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে। এই ঘটনার পেছনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জড়িত থাকার বিষয়টি কেউ একেবারে ফেলে দেওয়া যায় না। ইতিমধ্যে তাকে সিবিআই বারবার ডেকে পাঠিয়েছে। কিছুক্ষণ আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এই ঘটনার পেছনে ব্লক প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতার করার জন্য। তাহলে শাসকদলের সঙ্গে জড়িত আছে প্রমাণিত। মুখ্যমন্ত্রীর কথা থেকে পরিষ্কার ঘটনার পেছনে কারা জড়িত আছেন তিনি তা জানেন। বিজেপির আইনজীবী প্রিয়াঙ্কার টেবরিওয়ালের বক্তব্য, এখনো পর্যন্ত কোনো গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে কিনা। ভাদু শেখ এবং তার সঙ্গীদের সঙ্গে কী ব্যবহার হয়েছে তার বিস্তারিত চিঠি অনুব্রত মণ্ডল মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়েছেন। এরপরেও কী করে পুলিশ মন্ত্রী হিসাবে তাঁর পুলিশ সঠিক তদন্ত করবে। সেই থেকেই বোঝা যাচ্ছে তদন্ত কী ভাবে হবে। মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রী জানেন সেখানে কী হয়েছে। অভিযোগ তাঁর। তিনি আরও দাবি করেছেন, দমকল বাহিনী জল দিয়ে সমস্ত প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করেছে।
আরও পড়ুন- নিজেকে নির্দোষ বলছেন আনারুল! নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা চান
আজই রামপুরহাট কাণ্ডে হাইকোর্টে কেস ডায়েরি জমা দিলেন রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল। তিনি জানিয়েছেন, সিসিটিভি ইতিমধ্যে লাগানো হয়েছে। ইতিমধ্যে সেন্ট্রাল ফরেনসিক ল্যাবরটরি সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আজ সকালে তাদের আনার কথা ছিল কিন্তু কেন আসেনি জানা নেই। আরও জানান, প্রত্যক্ষদর্শী বা সাক্ষীদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। ময়নাতদন্ত ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে। পাশাপাশি তিনি এও প্রশ্ন তোলেন, রাজ্যের একজন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে যদি তিনি ঘটনাস্থলে যান সেখানেও অপরাধ কী? তিনি তো মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ঘটনাস্থলে যেতে পারেন। এতে তদন্তের কোথায় ব্যাঘাত ঘটবে?