১২ দফা দাবিতে DI অফিসে ডেপুটেশন জমা, শিক্ষক ‘হয়রানি’ বন্ধের দাবি

১২ দফা দাবিতে DI অফিসে ডেপুটেশন জমা, শিক্ষক ‘হয়রানি’ বন্ধের দাবি

কলকাতা: লক্ষ লক্ষ শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ না করে সার্ভিস প্লেসমেন্টের নামে শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলি হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সহ আদালতের রায় অনুযায়ী বকেয়াসহ কেন্দ্রীয় হারে ডিএ প্রদান, ডিআই অফিসের কাজের স্বচ্ছতা ও গতিশীলতার মতো বিষয়ের বিভিন্ন দাবিতে ‘মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি (STEA)’ ডিআই অফিসে ডেপুটেশন জমা দিয়েছে। শুক্রবার এই ডেপুটেশন জমা দিয়েছে সংগঠন।

আরও পড়ুন- করোনার দোসর হয়েছে ডেঙ্গি, পুজোর আগে চিন্তা বাড়ছে বাংলার

আসলে সম্প্রতি ক্যানিং লাইনে একটি স্টেশনে স্কুলের শিক্ষকদের “সার্ভিস প্লেসমেন্ট”-এর মাধ্যমে বদলি করায় ট্রেন অবরোধ করা হয়েছিল। সেই বদলির প্রতিবাদে আলিপুরে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক (DI) দফতরে বিক্ষোভ দেখিয়ে এই ডেপুটেশন দিয়েছে “মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি(STEA)”। ডেপুটেশনের আগে জেলা শাসক ও ডিআই অফিস চত্ত্বরে একটি প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ সভা করা হয়। ডিআই সুজিত কুমার মাইতি ও নবনিযুক্ত এআই অমিত দাস সমস্ত বিষয়গুলি গুরুত্ব দিয়ে শোনেন এবং তাঁদের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়গুলি দ্রুত নিষ্পত্তি করার কথা জানিয়েছেন।

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদারের বক্তব্য, যে শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলি করা হচ্ছে তিনি বা সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষকও কিছুই জানছেন না। মানা হচ্ছে না সার্ভিস রুল বা নির্দিষ্ট কোনও নিয়ম। তাই এই বদলি নীতিকে অগণতান্ত্রিক এবং স্বৈরতান্ত্রিক বলে অবিলম্বে প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছেন তিনি। এই বিক্ষোভ ডেপুটেশনে উপস্থিত ছিলেন জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার, জেলা সহ সভাপতি সূর্যকান্ত হালদার, জেলা সহ সম্পাদক অমিত হালদার, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অতীন্দ্রনাথ হালদার, জেলা কমিটির সদস্য পার্থ সাহা, রাজকুমার নন্দ, সুজিত নাইয়া, নীলকান্ত মন্ডল, প্রবীর গায়েন সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সার্ভিস প্লেসমেন্ট বদলিতে ভুক্তভোগী শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ ও সমিতির সদস্যগণও ডেপুটেশনে উপস্থিত ছিলেন।

মূলত ১২ দফা দাবিতে ডেপুটেশন দেওয়া হয় শুক্রবার। প্রথম দাবি, “সার্ভিস প্লেসমেন্ট”-এর নামে শিক্ষক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত সকল ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে, অবিলম্বে সকল শূন্যপদে স্থায়ী নিয়োগ করতে হবে। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে মান্যতা দিয়ে বকেয়া সহ সমস্ত ডিএ প্রদান করতে হবে। একই সঙ্গে লস্ট ইনক্রিমেন্টাল এরিয়ার সহ বিভিন্ন কারণে প্রাপ্য সমস্ত বকেয়া এরিয়ার প্রদান হবে। এছাড়া ডিআই অফিসে ‘অনলাইন ফাইল ট্র্যাকিং’ চালু করতে হবে, অবিলম্বে টিজিটি স্কেল ও সিএএস প্রদান করতে হবে। সংগঠনের আরও দাবি, শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের জন্য স্বাস্থ্যবীমা-WBHS চালু করতে হবে, লাইব্রেরিয়ান ও করণিক, শিক্ষকর্মীদের উপযুক্ত স্কেল ও জবচার্ট সংক্রান্ত বঞ্চনা দূর করতে হবে। তারপর প্যারা, ভোকেশনাল, MSK, ICT ও NSQF শিক্ষকদের মর্যাদা ও উপযুক্ত বেতন দিতে হবে। অবিলম্বে জেলার সব স্কুলকে ROPA -2019 অপশন ফিক্সেশনের Consolidated Statement প্রদান করতে হবে, নবনিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের দ্রুত কনফার্মেশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং ডিআই অফিসে শিক্ষক হয়রানি বন্ধ করে কাজের স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনতে হবে।

এছাড়া গত ৯ জুন ডিআই ডেপুটেশনে লস্ট ইনক্রিমেন্টাল এরিয়ার সহ বিভিন্ন বকেয়া এরিয়ার, নব নিযুক্ত শিক্ষকদের কনফারমেশন সহ বিভিন্ন বিষয়ে যে বিষয়গুলি আলোচনা হয়েছিল তা আবার স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। বেশ কিছু বিষয়ে তাঁর এক্তিয়ার না থাকলেও ডিআই অফিস গত বিষয়গুলো তিনি দ্রুত নিষ্পত্তি করবেন বলে কথা দিয়েছেন। তবে দাবি গুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − 8 =