কলকাতা: তিনি সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন। খুব খুশি ছিলেন। কিন্তু আতঙ্ক ছিল রেণুর স্বামীর। সে ভেবেছিল চাকরি করে বউ তাকে ছেড়ে চলে যাবে। তাই বউকে ‘শাস্তি’ দিতে তার ডান হাত কেটে দিয়েছিল সে। নৃশংস এই কাজ করতে তাকে ইন্ধন জুগিয়েছিল বন্ধুরাও। এক লহমায় রেণুর ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটে গিয়েছিল চার দিন আগে। তার ডান হাত আর জোড়া লাগানো যাবে কিনা সেই নিয়ে সংশয় ছিল। এখন স্পষ্ট যে, ওই হাতে আর কিছুই করতে পারবেন না রেণু। কিন্তু তাতে কী? ডান হাত কাটা যাওয়ার চারদিনের মধ্যেই বাঁ হাত দিয়ে লেখা শুরু করেছেন তিনি। জীবন যুদ্ধে তিনি হারবেন না।
আরও পড়ুন- জামাই আদরে বরণ ছাত্রীদের, পালন করা হল ‘কন্যাশ্রী ষষ্ঠী’
প্রথম থেকেই মেধাবী ছিলেন রেণু খাতুন৷ তাঁর স্বপ্ন ছিল সেবিকা হওয়ার৷ এ জন্য ট্রেনিংও নেন তিনি৷ দিন কয়েক আগেই তিনি জানতে পারেন নার্সের পরীক্ষায় তিনি সফল হয়েছেন৷ তালিকায় তাঁর নাম উঠেছে৷ খুব তাড়াতাড়ি চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু তার আগেই এই ঘটনা। যদিও রেণু নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর স্বামী তাঁকে পিছিয়ে দিতে চাইলেও তিনি হার মানবেন না। নিজের পায়ে দাঁড়াবেন। তবে তিনি তাঁর স্বামী এবং বন্ধুদের শাস্তি চাইছেন। আশা রাখছেন তারা খুব জলদিই শাস্তি পাবে। মুখ্যমন্ত্রীও যদি এই ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন তাহলে ভালো হয়, এমন বক্তব্য তাঁর। আসলে যাই হোক না কেন, নিজের স্বপ্ন পুরণ তিনি করেই ছাড়বেন, এমন পণ করেছেন।
শনিবার গভীর রাতে রেণু যখন ঘুমাচ্ছিলেন, তখন তাঁর স্বামী মুখে বালিস চাপা দিয়ে তাঁর ডান হাতের কব্জি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে ফেলেন৷ এখন কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। এই ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছিল যে তাঁর হাত আর জোড়া লাগানো সম্ভব কিনা। বিশেষজ্ঞরা বলছিলেন, কাটা হাতটি কী ভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে তার ওপর নির্ভর করছে ওই অংশটি জোড়া লাগানো যাবে কি না। এখন স্পষ্ট, ডান হাতে কোনও দিনই লিখতে পারবেন না রেণু।