কলকাতা: তিনি আদতে কোনও সেলেব্রিটি নন। কিন্তু এই মুহূর্তে তাঁকে বাংলার তথা দেশের কেউ চেনেন না, এমন নয়। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের একজন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বর্তমানে রাজ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যা যা নির্দেশ আসছে বা পদক্ষেপ হচ্ছে তার সিংহভাগ কারণ তাঁকেই বলা যায়। সেই বিচারপতি এক সময় ওকালতিতে না এসেছে সরকারি চাকরি করতেন। পরে তা ছেড়েও দেন। কিন্তু কেন ঝুঁকি নিয়েছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়? বাংলার এক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিয়ে সেই কথা জানালেন তিনি।
আরও পড়ুন- বগটুই কাণ্ডের মূল পাণ্ডা সিবিআই জালে, সিউড়ি থেকে পাকড়াও
আদ্যপ্রান্ত বাংলা মিডিয়ামে পড়া ছাত্র ছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অল্প বয়সে বাবা মারা গিয়েছে। তারপর পরিবারের হাল ফেরাতে চাকরিতে যোগ দেন। ডব্লিউবিসিএস অফিসার হিসেবে উত্তরবঙ্গে পোস্টিং ছিল তাঁর। সেখানে মূল কাজ ছিল পাট্টা বিলি। কিন্তু তৎকালীন এক অতি বাম রাজনৈতিক দলের কর্মীরা পাট্টা বিলি নিয়ে চাপ দিতে থাকে তাঁকে। পাট্টা দেওয়ার আগে ইন্সপেকশন করা নিয়ে বিবাদ হতে থাকে। সেই সময় তাঁকে দু’দিন ‘ঘেরাও’ পর্যন্ত করা হয় বলেই জানিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সেই সময় প্রাণ হারানোর মতো ভয় ছিল বলেও বলেছেন তিনি।
কিন্তু কাজের সঙ্গে কোনও আপস করবেন না বলেই সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে এসে তিনি আইনের জন্য কাজ শুরু করেন। ল এনরোলমেন্ট করার পর ওকালতির প্রাকটিস করতে শুরু করেন তিনি। তবে কেন ঝুঁকি নিয়ে সরকারি চাকরি পেয়েও ছেড়ে দিয়ে তিনি ওকালতিতে এলেন? বিচারপতি জানিয়েছেন, ন্যাশেনাল স্কুল অফ ড্রামায় পড়ার সময় তিনি একটা কথা শুনতেন। চাকরি মানে খুঁটিতে গরু বাঁধা। চাকরি করলে আর বেশি কিছু করার থাকে না। যোগ্য হলেও ওপরে ওঠা যাবে না, যে ওপরে আছে, অযোগ্য হলেও সেই ওপরে থাকবে। তাই চাকরি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।