জেলে প্রথম রাত কেমন কাটল অনুব্রতর? কী খেলেন কেষ্ট

জেলে প্রথম রাত কেমন কাটল অনুব্রতর? কী খেলেন কেষ্ট

কলকাতা:  তাঁর জামিনের জন্য আদালতে মরিয়া চেষ্টা করেছিলেন আইনজীবী৷ কিন্তু, জামিন পাননি গরু পাচার কাণ্ডে ধৃত অনুব্রত মণ্ডল৷ বরং আদালতের নির্দেশে আগামী ১৪ দিন তাঁকে থাকতে হবে আসানসোল সংশোধনাগারে৷ বুধবার ছিল জেল হেফাজতে অনুব্রতর প্রথম রাত৷ ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সেখানেই থাকতে হবে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে৷ কিন্তু, জেলের কুঠরিতে কেমন কাটল তাঁর রাত? কী খেলেন কেষ্ট? ঘুমালেনই বা কোথায়?

আরও পড়ুন-  মিড-ডে মিলে মাথাপিছু ২০ টাকা বরাদ্দ সহ ৫ দফা দাবি, ডেপুটেশন দিল শিক্ষক সমিতি

গতকাল জেলে যাওয়ার আগে নিয়ম মেনে অনুব্রতর ব়্যাপিট টেস্ট করানো হয়৷ রিপোর্ট নেগেটিভ আসে৷ তবে প্রতিদিন ৩৭টি ওষুধ খেতে হয় তাঁকে৷ রাতে ঘুমানোর আগে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে নেবুলাইজার এবং অক্সিজেন মাস্ক দিতেই হয়৷ যে কোনও সময় তাঁর  ইনহেলার ও অক্সিজেন মাস্কের প্রয়োজন পড়ে। তাই অনুব্রতর চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন, তার যথাযথ ব্যবস্থা যাতে করা হয়, তা দেখার জন্য সংশোধনাগারের সুপারিন্টেন্ডেন্টকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী।  আপাতত তাঁকে আইসোলেশন সেলে রাখা হয়েছে৷ সেখানে একটি চৌকি দেওয়া হয়েছে কেষ্টকে৷ ফলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো প্রথম রাতে তাঁকে মাটিতে শুয়ে কাটাতে হয়নি৷ দেওয়া হয়েছে একটি টেবিল ফ্যানও৷ তবে অনেক রাত পর্যন্ত তিনি দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি তৃণমূলের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা৷ পরে অবশ্য ঘুমিয়ে পড়েন তিনি৷ 

জানা গিয়েছে, জেলে খাওয়া নিয়ে বিশেষ কোনও সুবিধাই পাচ্ছেন না তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি৷ অন্যান্য কয়েদিদের মতোই এদিন রাতে তাঁকে খেতে দেওয়া হয় ডাল, সবজি আর রুটি৷ বিকেলে খেয়েছিলেন অল্প মুড়ি৷ সঙ্গে ছিল চা। এক সময় এক সাক্ষাৎকারে এই অনুব্রতই বলেছিলেন, তিনি নাকি এক কিলো মাংস একা খেয়ে নিতেন৷ ২০-২২ পিস মাছ খাওয়া তাঁর কাছে কোনও ব্যাপারই ছিল নাছিল জলভাত৷ তিনি নিজেও রান্না করতে জানেন৷ কাঁচকলা দিয়ে খুব ভালো কাবাব বানাতে পারতেন কেষ্ট৷ 

বুধবার আসানসোল আদালতে অনুব্রতর জামিনের জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন তাঁর আইনজীবী৷ এমনকী যে কোনও শর্তে প্রয়োজনে অনুব্রতর বীরভূমে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞার শর্ত মানতেও তাঁরা রাজি ছিলেন। প্রয়োজনে তিনি নিজাম প্যালেসের আশপাশে গিয়ে থাকবেন বলেও উল্লেখ করা হয়। তাঁর স্বাস্থ্যের বিষয়টিও জানান আইনজীবী৷ কিন্তু কোনও শর্তেই জামিন মেলেনি৷ জেলে যেতে হয় অনুব্রতকে৷ তবে তাঁকে যে সেলে রাখা হয়েছে, সেখানে একটি অ্যাটাচ শৌচাগার রয়েছে৷ তবে তা কমোড নয়৷ ফলে সমস্যা হতে পারে ফিসচুলায় আক্রান্ত অনুব্রতর৷ তাঁকে দেওয়া হয়েছে লোহার বেড ও কম্বল৷ প্রসঙ্গত, এই জেলেই বন্দি রয়েছেন অনুব্রতর প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন৷  তবে তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার কোনও সুযোগ নেই৷ এদিন জেলে ঢোকার পর কিছুটা বিষণ্ন লাগছিল কেষ্টকে৷ চেনা মেজাজ ছিল না চোখে মুখে৷ আত্মবিশ্বাস যেন টলে গিয়েছে৷ সেলে ঢুকে মাথায় হাত রেখে বেশ কিছুক্ষণ চিন্তাও করেন তিনি৷ অনেক রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন কেষ্ট৷