কলকাতা: বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা, কলকাতা জেলা সম্পাদিকা সুমিতা মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র ভবনে মিড-ডে মিলে মাথাপিছু ২০ টাকা বরাদ্দ সহ ৫ দফা দাবিতে ডেপুটেশন দেন। তাঁদের বক্তব্য, বর্তমানে সমস্ত জিনিসপত্রের সঙ্গে গ্যাসের দাম প্রতিদিন যেভাবে বাড়ছে তাতে সামান্য টাকায় মিড-ডে মিল চালাতে শিক্ষকদের নাভিশ্বাস উঠছে।
আরও পড়ুন: DA-র বিজ্ঞপ্তি জারি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের, ৩ শতাংশ হারে কারা পাবেন?
সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অগ্নিমূল্যের বাজারেও মিড-ডে মিলে বরাদ্দ বাড়ানো হয়নি। ছাত্র পিছু বরাদ্দ মাত্র প্রাথমিকে ৪.৯৭ টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিকে ৭.৪৫ টাকা। অর্থাৎ প্রতি মাসে প্রাপ্য প্রাথমিকে ৪.৯৭×২০ =৯৯.৪০ টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিকে ৭.৪৫×২০= ১৪৯.০০টাকা। এর বাইরে রাঁধুনি এবং মাথাপিছু প্রাথমিকে ১০০ গ্রাম ও উচ্চ প্রাথমিকে ১৫০ গ্রাম করে চাল দেওয়া হয়। লক্ষ্যনীয়, করোনাকালে রান্না বন্ধ করে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছিল কিন্তু সেখানে বরাদ্দকৃত অর্থের পুরোটাও ব্যয় করা হয়নি। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সাল পর্যন্ত ২৩ মাসে প্রাথমিকে বরাদ্দ ২২৮৬.২০ টাকা এবং উচ্চ প্রাথমিকে ৩৪২৭ টাকা। কিন্তু ব্যয় করা হয়েছে মাত্র ১৮৩২ টাকা।
অন্যদিকে উচ্চ প্রাথমিকের ছাত্রদের জন্য মাথাপিছু ১৫০ গ্রাম করে মাসে ৩ কেজি করে চাল প্রাপ্য হলেও মাত্র ২ কেজি করে দেওয়া হয়েছে। ফলে করোনাকালে তাদের প্রাপ্য থেকে ২৩ কেজি চাল বঞ্চিত করা হয়েছে, অভিযোগ এমন। পাশাপাশি মিড-ডে মিল ওয়ার্কারদের অবস্থাও চরম সঙ্কটে বলে দাবি। ৫০ জন ছাত্র পিছু ১ জন হিসেবে তাদের মাত্র ১৫০০ টাকার বিনিময়ে কাজ করানো হয়। তাও গ্রীষ্মের ও পুজোর ছুটিতে তাদের সামান্য ভাতাটুকু দেওয়া হয় না। এমনকি রান্না করলেও রাঁধুনীদের জন্য কোনও রকম খাদ্যের বরাদ্দ করা হয়নি বলেও দাবি।
আরও পড়ুন- আপাতত জেলেই থাকতে হবে ‘অপা’কে, বাড়ল হেফাজতের মেয়াদ
এই প্রেক্ষিতেই সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হাণ্ডা অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে অহরহ উন্নয়নের নাকি প্রতিযোগিতা চলছে। অথচ ক্ষুধা তালিকার শীর্ষে ভারত। যেখানে প্রতি ৩ জন শিশুর ১ জন অপুষ্টিতে ভুগছে। তা স্বত্ত্বেও করোনাকালে মিড ডে মিলে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। যা লজ্জাজনক। তিনি অবিলম্বে করোনাকালের প্রাপ্য বকেয়া অর্থ ও চাল ছাত্র-ছাত্রীদের ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি মিড-ডে মিলে মাথাপিছু ২০ টাকা বরাদ্দ, পৃথকভাবে গ্যাস বা জ্বালানির বরাদ্দ, এবং ৫০ জনের কম ছাত্রযুক্ত বিদ্যালয়ের জন্য বিশেষ বরাদ্দ সহ মিড-ডে মিল ওয়ার্কারদের সমস্যা সমাধানের দাবি জানান।