কলকাতা: বিশাল হইচই ফেলে শুরু হতে চলছে রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প৷ এই প্রকল্পে সরকারের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে তুলোধোনা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী৷
আরও পড়ুন- প্রতারণা মামলায় খানিক স্বস্তি এই বিজেপি নেতার, করতে হবে সহযোগিতা
এদিন শুভেন্দু বলেন, বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল সুপ্রিম যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার মধ্যে অন্যতম ছিল সামাজিক ন্যায় ও সুরক্ষা৷ অর্থাৎ প্রতি পরিবারকে ন্যূনতম মাসিক আয়ের প্রতিশ্রুতি৷ এই প্রকল্পেরই নাম দেওয়া হয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার৷ ইস্তেহারে কোথাও হাতখরচ বলে উল্লেখ ছিল না৷ বরং বলা হয়েছিল প্রতিটি পরিবারকে ন্যূনতম মাসিক আয় দেওয়া হবে৷ যা মানা হচ্ছে না৷ তিনি আরও বলেন, ডায়রেক্ট বেনিফিটের মাধ্যমে জনকল্যাণমূলক যে কোনও প্রকল্পে সম্মতি রয়েছে বিজেপি’র৷ প্রধানমন্ত্রী এমন ৩৮০টি ডিবিটি প্রকল্প চালু করেছেন৷
শুভেন্দু বলেন, পশ্চিমবঙ্গে ২২ শতাংশের বেশি বেকারত্ব রয়েছে৷ শিল্পায়নের গতি রুদ্ধ৷ বিনিয়োগ নেই৷ জমি নীতি নেই৷ ২০১৪ সালের পর থেকে এসএসসি পরীক্ষা হয় না৷ ন্যূনতম বেতন কেউ পায় না৷ সরকারি কর্মীদের ডিএ পর্যন্ত দেওয়া হয় না৷ সরকারি কর্মীরা এ বিষয়ে কথা বললে বলা হয়, ঘেউ ঘেউ করবেন না৷ কখনও রাজ্যের কঠিন আর্থিক অবস্থার কথা বলা হয়৷ ১ লক্ষ ৮৪ হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা নিয়ে শুরু হওয়া সরকার ৪ লক্ষ ৫৪ হাজার কোটি পৌঁছে গিয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর ভারতের কথা বলেন৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নির্ভরশীল বাংলা৷ এটাই বাংলার ভবিতব্য৷
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নও তোলেন শুভেন্দু৷ তিনি বলেন, ১ কোটি ৬ লক্ষ পরিবারের সমস্ত মহিলাকে এই প্রকল্পের আওতায় আনার কথা বলা হয়েছিল তৃণমূলের ইস্তেহারে৷ ইতিমধ্যে ৫ টাকার ডিম ভাত উঠে গিয়েছে৷ মাত্র ১৮ লক্ষ ভ্যাকসিন কিনে রাজ্য সরকার হাত তুলে নিয়েছে৷ একের পর এক প্রতিশ্রুতির অপমৃত্যু হয়েছে৷ দেখা যাচ্ছে ১ কোটি ৬ লক্ষ পরিবারে ৫ কোটির বেশি মহিলা রয়েছেন৷ এই সরকার সেই মহিলাদের মধ্যে থেকে ২ কোটিরও কিছু কম মহিলাকে বেছে নিয়েছে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্য৷ এই প্রকল্প ঘোষণার সময় বলা হয়নি যে আইসিডিএস, আশা কর্মী বা কোনও রকম ভাতা পাওয়া মহিলাদের এই টাকা দেওয়া হবে না৷ ৩ কোটির বেশি মহিলা এই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হবেন৷ এই দ্বিচারিতা বিরোধিতা করছে বিজেপি৷
শুভেন্দুর কথায়, ডিম ভাতের মতো এই প্রকল্পেরও অপমৃত্যু ঘটবে৷ কাট ছাঁট করেও এই প্রকল্পে বছরে ১৫ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি খরচ করতে হবে রাজ্য সরকারকে৷ এই প্রকল্প শুরু করতে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গকে দেউলিয়া করবে৷ বিজেপি’র দাবি, ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হাত খরচ নয়, ন্যূনতম আয় হিসাবে জেনারেল কাস্টদের ৩০০০ টাকা এবং তফশিলি পরিবারকে ৫০০০ টাকা করে দেওয়া হোক৷ সঙ্গে চাকরিতে নিয়োগ, পুলিশের রেশন, সমকাজে সমবেতন দেওয়ার ব্যবস্থা করুক সরকার৷