লন্ডন: ব্রিটিশ মসনদে বসতে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনক৷ ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের রাস্তা এখন পাকা৷ আগামী শুক্রবার ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেবেন৷ বিশ্বজুড়ে চর্চায় এখন ঋষি সুনক৷ হবে নাই বা কেন? ইতিহাস গড়ে ব্রিটেনের কুর্সিতে বসতে চলেছেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত এবং সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী৷ সুনকের সঙ্গে সঙ্গে এখন চর্চায় তাঁর স্ত্রী অক্ষতা মূর্তিও৷ কিন্তু কী ভাবে হল অক্ষতার সঙ্গে ঋষির প্রেম? সুনক দম্পতির এই প্রেম কাহিনি কোনও চিত্রনাট্যের চেয়ে কম নয়৷
আরও পড়ুন- মধ্যরাতে সিত্রাং-এর তাণ্ডব! উপকূল পেরিয়ে বাংলাদেশের স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড়, মৃত ৯
সুদর্শন, মেধাবী ঋষি সুনককে নাকি একেবারেই পছন্দ ছিল না অক্ষতার বাবা তথা ইনফোসিস কর্তা নারায়ণ মূর্তির৷ ভারতের ধনী শিল্পপতি তিনি৷ নিজের মেয়েকে ঋষির হাতে তুলে দিতে ঘোরতর আপত্তি ছিল তাঁর৷ কিন্তু, মেয়েও নাছোড়৷ বিয়ে করলে ঋষিকেই করবেন৷ শ্বশুর মশাইয়ের মন পেতে ‘অগ্নিপরীক্ষা’ দিতে হয়েছিল ঋষিকেও৷ কম কসরত করেননি তিনিও৷
ঋষি আর অক্ষতার প্রেম শুরু হয়েছিল কলেজ ক্যাম্পাসে৷ সালটা ২০০৬৷ স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করছিলেন অক্ষতা৷ ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই মেধাবী ছাত্র ছিলেন ঋষি। টপার ঋষিকে প্রথম দেখাতেই মনে ধরেছিল নারায়ণ-কন্যার৷ ঋষির মনেও জেগেছিল অনুভূতি৷ প্রথমে বন্ধুত্ব, তার পর প্রেম৷ তিন বছর রিলেশনে থাকার পর ২০০৯ সালে বেঙ্গালুরুতে গাঁটছড়া বাঁধেন ঋষি-অক্ষতা৷ যদিও কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ছাদনাতলার এই সফর মোটেই সহজ ছিল না৷ ঋষি-অক্ষতার প্রেমের মাঝে বারবার ভিলেন হয়ে বাধা দিয়েছিলেন ইনফোসিস কর্তা৷
ঋষিকে জামাই হিসাবে কোনও ভাবেই কল্পনা করতে পারেননি নারায়ণ মূর্তি৷ মেয়ে যখন ঋষির সঙ্গে প্রেমে মশগুল তখন রীতিমতো ভিলেন হয়ে উঠেছিলেন তিনি৷ কিন্তু মেয়েও যে নিজের সিদ্ধান্তে অনড়৷ শুরু হয় বাবা-মেয়ের ঠাণ্ডা লড়াই৷ অবশেষে মেয়ের জেদের কাছে হার মানেন বাবা৷ দেখা করেন ঋষির সঙ্গে৷ শান্ত, মার্জিত ঋষির সঙ্গে কথা বলার পর অবশ্য তাঁকে মন্দ লাগেনি নারায়ণ মূর্তির৷ ধীরে ধীরে বরফ গলে৷ তবে পরবর্তীতে নায়ারণ মূর্তি নিজেই একবার বলেছিলেন, ঋষির কথা শুনে মনে হয়েছিল তিনি তাঁর সম্পূর্ণ বিপরীত চরিত্রের৷ যদিও সব বাঁধা কাটিয়ে তাঁর আশীর্বাদেই চারহাত এক হয়৷ বর্তমানে ঋষি ও অক্ষতার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে- অনষ্কা এবং কৃষ্ণা৷
সম্পত্তির দিক থেকে কম যান না অক্ষতাও৷ অর্থনীতির পাশাপাশি ফরাসি ভাষা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ঋষি-পত্নী৷ ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে ডিপ্লোমাও রয়েছে তাঁর। ইনফোসিসে তাঁর মোটা অঙ্কের শেয়ার রয়েছে৷ ফলে অক্ষতা যে বেশ ধনী, তা বলাই বাহুল্য। তবে সাম্প্রতিককালে তাঁর এই সম্পদই রাজনৈতিক ভাবে সমস্যায় ফেলেছিল স্বামী ঋষিকে।
অনেকেই আবার ঋষি সুনককে বেশ ‘নাক উঁচু’ বলে কটাক্ষ করে থাকেন৷ কিন্তু এই ঋষিই এক সময় হাত খরচের জন্য কাজ করেছিলেন সাউদাম্পটনের এক রেস্তোরাঁয়৷ তবে খুব তরুণ বয়সেই তিনি মিলিয়নেয়ার হয়ে ওঠেন৷ আর অক্ষতার সম্পত্তি তো ব্রিটেনের রানিকেও হার মানায়৷ ঋষি ও তাঁর স্ত্রী মোট ৭৩০ মিলিয়ন পাউন্ডের মালিক৷ ভারতীয় মুদ্রায় যার পরমাণ ৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকারও বেশি। ইনফোসিসে অক্ষতার শেয়ারের মূল্য প্রায় ৪৩০ মিলিয়ন পাউন্ড। অক্ষতা নিজে ব্রিটিনের একটি ভেঞ্চার কোম্পানির মালিক৷ পাশাপাশি ব্রিটেনের আরও পাঁচটি সংস্থার ডিরেক্টর অথবা শেয়ার হোল্ডার হিসাবে রয়েছেন অক্ষতা মূর্তি৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>