নয়াদিল্লি: ক্রমাগত কার্বন নিঃসরণ, বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে ধীরে ধীরে পৃথিবীর জলবায়ুর বদল ঘটছে৷ এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমাদের নীল গ্রহ৷ এই সঙ্কট মোকাবিলার কৌশল নির্ধারণ করতে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মিশরের শার্ম আল শেখ শহরে কোপ ২৭ শীর্ষ সম্মেলনে বসেছে ২০০টি দেশের প্রতিনিধিরা৷ এই সমস্যা মোকাবিলা প্রসঙ্গে উঠে এসেছে আর্থিক প্রসঙ্গও৷
আরও পড়ুন- মিশিগানের শান্ত জলে মেঘের ‘সুনামি’! ভিডিয়ো দেখে হতবাক নেটাগরিকরা
গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন কমাতে হলে সবুজ শক্তি বৃদ্ধির উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। বিশ্বব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, এই লক্ষ্য পূরণে ২০৩০ সালের মধ্যে সমস্ত দেশকে ৯০ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। বিশ্বব্যাঙ্কের মতে, এই বিনিয়োগগুলি সবুজ অর্থনীতির উত্তরণের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে। এই রূপান্তর নতুন নতুন অর্থনৈতিক সুযোগ এবং চাকরি ক্ষেত্রও তৈরির পথ সুগম করবে৷ এই ধারণাটি জলবায়ু তহবিল হিসাবে পরিচিত৷ যা চলমান COP27 (কোপ ২৭) শীর্ষ সম্মেলনের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়সূচি৷
গত কয়েক মাসে জলবায়ু-পরিবর্তন জনিত বিপর্যয় পৃথিবীর বুকে আঘাত হেনেছে৷ বন্যা ও ভূমিধসে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং কয়েক বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। পাকিস্তান এবং নাইজেরিয়ায় ভয়ঙ্কর বন্যা, আফ্রিকা এবং আমেরিকার পশ্চিমাঞ্চলে তীব্র খরা, ক্যারিবীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় এবং তিন মহাদেশজুড়ে নজিরবিহীন তাপপ্রবাহ এক কথায় বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে।
বিশ্ব জলবায়ু নিয়ে শার্ম আল-শেখের লোহিত সাগর রিসোর্টে ১৩ দিনের এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস৷ তিনি বলেন, ‘‘একের পর এক রিপোর্ট থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের একটি পরিষ্কার এবং অন্ধকার চিত্র পাওয়া যাচ্ছে।’
তাঁর কথায়, ‘‘কোপ ২৭ সম্মেলন অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণষ এই দশকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় খুব দ্রুত এবং সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পবির্তনের এই যুদ্ধে হয় আমরা জয়ী হব, নয়তো হেরে যাব৷’’
সুনির্দিষ্টভাবে এই লড়াইয়ের অর্থ হল ১৯ শতকের শেষের দিকের স্তরের (১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) উপরে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বৈশ্বিক উষ্ণতা সীমাবদ্ধ করতে হবে৷ এর জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস নির্গমন ৪৫ শতাংশ কমাতে হবে। বিজ্ঞানীদের হুঁশিয়ারি, এই প্রান্তিকের বাইরে উষ্ণায়ন হলে তা পৃথিবীকে বসবাসের অযোগ্য একটি হটহাউস করে তুলবে৷
গত সপ্তাহে প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমান প্রবণতাগুলো অব্যাহত থাকলে চলতি দশকের শেষে কার্বন দূষণ ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং ভূ-পৃষ্ঠের উষ্ণতা ২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে বৃদ্ধি পাবে। প্যারিস চুক্তির প্রতিশ্রুতিগুলি বাস্তবায়িত হলে এক ডিগ্রির কয়েক দশমাংশ তাপমাত্রা বৃদ্ধি হ্রাস পাবে।
গ্রিনপিস ইন্ডিয়ার ক্লাইমেট অ্যান্ড এনার্জি ক্যাম্পেনের প্রধান অবিনাশ কুমার বলেন, সমস্ত দেশের উচিত জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা দূর করে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমনকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করার পথে কঠোর পদক্ষেপ করা৷ এই লক্ষ্য বাস্তবায়িত করার জন্য ন্যায্য অবদান রাখা উচিত৷”
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>