নয়াদিল্লি: ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের জন্য স্ত্রীকে বাধ্য করতে পারেন না স্বামী৷ দাম্পত্য বিবাদের একটি মামলার শুনানির সময় এমনই রায় দিল গুজরাত হাইকোর্ট৷ বিচারপতি জে বি পাদ্রিওয়ালা এবং বিচারপতি নির্মল মেহতার বেঞ্চ এদিন পারিবারিক আদালতের রায় খারিজ করে বলে, ‘বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য স্ত্রীকে বাধ্য করতে পারেন না স্বামী৷’
আরও পড়ুন- করোনা নেগেটিভ, ওমিক্রন পজিটিভ! দেশের দ্বিতীয় মৃত্যু নয়া ভ্যারিয়েন্টে
প্রসঙ্গত, এই মামলাটি বেশ পুরনো৷ এক মুসলিম দম্পতির বিবাদ গড়ায় হাইকোর্টে৷ জানা যায় ১৯৯৫ সালে বিয়ে হয়েছিল ওই মুসলিম দম্পতির৷ তাঁদের একটি সন্তানও হয়৷ কিন্তু সন্তান হওয়ার পরেই পেশায় নার্স স্ত্রী শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যান৷ তাঁর অভিযোগ, ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাঁকে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যেতে চাইছেন তাঁর স্বামী৷ ওই মহিলার স্বামী বৈবাহিক অধিকার ফিরে পেতে পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হন৷ পারিবারিক আদালত বৈবাহিক অধিকারের পক্ষেই রায় দেয়৷ সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান স্ত্রী৷
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্ট তার রায়ে জানিয়েছিল, স্ত্রী কখনওই স্বামীর সম্পত্তি হতে পারে না। ফলে তাঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে যৌন সম্পর্ক স্থাপন বা বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে বাধ্য করানো যায় না। এর আগে ইউপিএ জমানায় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি জেএস বর্মার নেতৃত্বাধীন কমিটি বৈবাহিক ধর্ষণকে ফৌজদারি অপরাধের তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছিল। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর ২০১৭ সালে হলফনামা দিয়ে সেই সুপারিশের বিরোধিতা করে নরেন্দ্র মোদী সরকার৷
কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, এই ধরনের কোনও আইন কার্যকর হলে বৈবাহিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি হবে৷ কোনও কোনও ক্ষেত্রে স্বামীদের হেনস্থাও করা হতে পারে৷ কিন্তু গত অগাস্ট মাসেই একটি বিবাহ বিচ্ছেদের মামালায় কেরল হাইকোর্ট বলেছিল, আইনি বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বৈবাহিক ধর্ষণ যুক্তিগ্রাহ্য কারণ হতে পারে। আদালত তার রায়ে আরও বলে, ‘ভারতে বৈবাহিক ধর্ষণ দণ্ডনীয় অপরাধ নয়৷ তবে তা শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারের আওতাভুক্ত৷ বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ বলেই স্ত্রীর ব্যক্তি স্বাধীনতা উপেক্ষা করে বলপূর্বক তাঁর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করা হলে, তা আদতে বৈবাহিক ধর্ষণেরই সামিল।’