নয়াদিল্লি: বাংলায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর অন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যের দিকে নজর দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ত্রিপুরা থেকে শুরু করে অসম, গোয়া, সব রাজ্যেই সংগঠন মজবুত করার কাজ শুরু করেছে ঘাসফুল। তাদের আসল লক্ষ্য পরবর্তী লোকসভা নির্বাচন যেখানে তারা বিজেপিকে পদচ্যুত করতে চাইছে। কিন্তু গত লোকসভা থেকে যে প্রশ্ন বারবার ফিরে এসেছে সেই প্রশ্ন উত্তর হয়তো মিলছে এবার। প্রশ্ন ছিল, নরেন্দ্র মোদী বা বিজেপির বিরোধী মুখ কে? কংগ্রেস বা রাহুল গান্ধী যে ব্যর্থ হয়েছেন তা গত নির্বাচনগুলিতে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এবার হয়তো ‘মুখ’ পাওয়া গিয়েছে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক সমীক্ষা দাবি করছে যে, এই মুহূর্তে দেশে বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে সবথেকে জনপ্রিয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।
আরও পড়ুন- গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত উঠল কেঁপে, তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত
বাংলার বিজেপিকে পর্যুদস্ত করার পর তৃণমূল বারংবার দাবি করে আসছে যে বিজেপিকে সরানোর জন্য বিকল্প একমাত্র তৃণমূল কংগ্রেস। পুরভোট হোক কিংবা বিধানসভা, লোকসভা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নরেন্দ্র মোদীর বিকল্প মুখ। এক্ষেত্রে তারা সরাসরি কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধীকে একহাত নিয়েছে। তারা ব্যর্থ, বিজেপির বি-টিম, অনেক কথাই বলা হয়েছে। বঙ্গ জয়ের পর কংগ্রেস সহ অন্য দলের দিকে জোটের উদ্দেশ্যে হাত বাড়ালেও এখন যেন একাই খেলার প্রস্তুতি নিয়েছে ঘাসফুল। আর তাদের মমতাই বিকল্প মুখ, এই দাবি আরও জোরাল করল এই সমীক্ষা। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ওই সমীক্ষা বলছে, এই মুহূর্তে বিরোধী জোটের নেতা হিসাবে দেশবাসীর প্রথম পছন্দ মমতাই। দু’নম্বরে রয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ‘ইন্ডিয়া টুডে’ তাঁদের ‘মুড অফ দ্য নেশন’ সমীক্ষায় এমনটাই দাবি করেছে। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া ১৭ শতাংশ মানুষ মনে করছেন, এই সময়ে মোদীকে টক্কর দেওয়ার সবচেয়ে ক্ষমতা রাখেন মমতা। মমতার পর বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দেওয়ার লড়াইয়ে আছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী অনেকটাই পরে, তৃতীয় স্থানে।
অন্যদিকে, দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার নিরিখে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের পরেই রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বোঝাই যাচ্ছে, ধীরে ধীরে জাতীয় স্তরে নিজেকে আরও বেশি প্রতিষ্ঠা করছেন তিনি। তবে কি কংগ্রেসের চাপ বাড়ল? প্রথমে জোটের ইঙ্গিত দিয়েও এখন প্রত্যক্ষভাবে কংগ্রেসকে একহাত নিচ্ছে তৃণমূল। নেতৃত্ব থেকে শুরু করে বিজেপির কাছে ‘হার মানা’ মনোভাব, এইসব নিয়ে তাদের নিশানা করছে তারা। এর মধ্যে আবার এই সমীক্ষা প্রকাশ পেয়েছে। স্পষ্টভাবেই বলা যায় যে, কংগ্রেস নেতৃত্ব এখন বেশ চাপে। কারণ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি তাদের প্রমাণ করতে হবে যে বিরোধী হিসেবে তারাই ক্ষমতাবান। অন্তত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা এমনটাই ভাবছেন।