অমৃতসর: তখন তাঁর বয়স মাত্র দুই৷ সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত হন পঞ্জাবের মেয়ে মিষ্টি। রোগের ছোবলে শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি৷ ঠিক মতো হাঁটাচলা করতেও সমস্যা হয় তাঁর৷ তবে ইচ্ছশক্তি হার মানায় সব প্রতিকূলতাকে৷ সেই কথাটাই যেন আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন এই ‘জেদি’ মেয়ে৷ শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে তুচ্ছ করে ভর্তি হলেন আইআইটি রোহতাকে৷ সেখান থেকেই এমবিএ কোর্স করছেন মিষ্টি৷
আরও পড়ুন- ‘আমি ভাগ্যবান, গর্বিত’, লালুকে কিডনি দান করছেন মেয়ে রোহিণী
২০০২ সালে৷ মিষ্টির মা-বাবা জানতে পারেন, এক জটিল রোগে আক্রান্ত তাঁদের মেয়ে৷ তখন মিষ্টির বয়স মাত্র দুই। এক সাক্ষাৎকারে মিষ্টি বলেন, ‘‘এই খবরটা আমার বাবা-মাকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে দিয়ে গিয়েছিল। আর পাঁচটা শিশুর মতো এই জগৎ দেখার সুযোগ পাব না আমি, এই আক্ষেপ কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল তাঁদের। তবে তাঁরা মন শক্ত করে আার ব্যকবোন হয়ে ওঠেন। আমাকে এমন এমন কাজ করার জন্য উৎসাহিত করতে থাকেন, যা আমার মতো মানুষরা করতে পারে বলে কেউ ভাবতেই পারেন না।’’
স্কুলের পাঠ শেষ করে দিল্লির হংসরাজ কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে স্নাতক পাশ করেন মিষ্টি। পাশাপাশি ফরাসি ভাষাতেও বেশ কয়েকটি কোর্স করে ফেলেন তিনি। মিস্টির কথায়, ‘‘কলেজের পর প্রতিদিন আমার ফিজিওথেরাপির সেশন চলত। বাকিদের মতো ‘ক্যাট’ পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য আলাদা করে কোনও কোচিং নেওয়ার সুযোগ আমি পাইনি। তবে আমার জন্য বাবা-মা বাড়িতেই সবরকম ব্যবস্থা করেছিলেন। সময়ের মধ্যে যাতে পড়াশোনা শেষ করতে পারি,এর জন্য মা-ই আমার বিশেষ ক্লাস নিতেন।’’
দু’বার ‘ক্যাট’ পরীক্ষায় বসেন মিষ্টি। প্রথম বার ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয়বার আর থমকে দাঁড়াতে হয়নি৷ ছুটির দিনগুলিতে দিনে সাত ঘণ্টা করে আর সপ্তাহের বাকি দিনগুলিতে পাঁচ ঘণ্টা করে ‘ক্যাট’-এর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। এই লড়াকু মেয়ের কথায়, ‘‘আমার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আমার হাঁটাচলায় বাঁধা দিলেও আমার চেতনাশক্তি, চিন্তাভাবনায় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়নি।’’ এমবিএ করে ম্যানেজোরিয়াল পোস্টে কিছু করে দেখানোটাই এখন মিষ্টির স্বপ্ন৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>