কলকাতা: নবম-দ্বাদশ স্তরের মেধা তালিকাভুক্ত অথচ চাকরি থেকে বঞ্চিত প্রার্থীরা লাগাতার অনশন করে চলেছেন গান্ধী মূর্তির পাদদেশে৷ প্রায় ৭০ দিন ধরে ঝড়-বৃষ্টি-শীত উপেক্ষা করে চলছে তাঁদের আন্দোলন৷ মেধা তালিকাভুক্ত চাকরি প্রার্থীদের অভিযোগ, নবম-দ্বাদশ স্তরের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্কুল সার্ভিস কমিশন নিয়ম লঙ্ঘন করেছে৷ মেধাতালিকাভুক্ত যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের জীবন অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে৷ এরই মধ্যে সান্তার পোশাকে আজ বড়দিনে কেক এবং লিফলেট নিয়ে পার্কস্ট্রিটের পথে নামে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের নবম-দশম স্তরের ওয়েটিং প্রার্থীরা৷
আরও পড়ুন- বড়দিনেও বিষাদের সুর! নিয়োগের অপেক্ষায় ২৮২ দিন ধরে রাস্তায় পড়ে চাকরিপ্রার্থীরা
আন্দোলনরত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের অভিযোগ, মেধাতালিকার প্রথম দিকে নাম থাকা প্রার্থীদের নিয়োগপত্র না দিয়ে মেধাতালিকায় পিছনের সারিতে নাম থাকা প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁদের বিস্ফোরক অভিযোগ, মেধাতালিকায় নাম না থাকা অনুত্তীর্ণ প্রার্থীকেও অবৈধভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশন চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে।
ধর্না মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল বলেন, ২০১৯ সালে যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের ব্যানারে অরাজনৈতিক ভাবে ২৯ দিন ব্যাপী অনশন হয়েছিল। সেই অনশন মঞ্চে এসে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে উপস্থিত হয়ে বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের আশ্বস্ত করেছিলেন৷ বলেছিলেন, মেধাতালিকাভুক্ত শিক্ষক পদপ্রার্থীরা যাতে বঞ্চিত না হন, তার ব্যবস্থা করা হবে। প্রয়োজনে আইনের কিছু পরিবর্তন করেও তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন৷ কিন্তু ২০২১-এও সেই প্রতিশ্রুতি কার্যকর হয়নি।
বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীগণ প্রশ্ন, আর কত দিন লাগবে প্রতিশ্রুতি কার্যকর করতে? ন্যায্য চাকরি পেতে আর কতদিন ধর্না চালিয়ে যেতে হবে? একদিকে ক্রমাগত ভাবে শীত বাড়ছে। প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যেই চলছে লড়াই৷ বিভিন্ন জেলা থেকে নবম-দ্বাদশ স্তরের মেধাতালিকা ভুক্ত বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা নিয়মিত ভাবে ধর্না মঞ্চে আসছেন। আন্দোলনরত বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের পাশে দাঁড়াতে ইতিমধ্যেই কৃষক আন্দোলনের কয়েকজন নেতা ধর্না মঞ্চে এসেছিলেন। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক সংগঠনগুলিও বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীদের মঞ্চে আসতে শুরু করেছেন। মানবাধিকার কমিশনের পদাধিকারীগণও আগামী দিনে ধর্না মঞ্চে আসার আশ্বাস দিয়েছেন।
ধর্না মঞ্চের স্টেট কো-অর্ডিনেটর সুদীপ মন্ডল জানান, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা ধর্না মঞ্চে আসছেন। যাঁদের অধিকাংশই কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর পরিবারের সন্তান। সুদীপ মন্ডল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করেছেন যে, তাঁদের দিকে লক্ষ্য করার জন্য৷ যাতে নতুন বছর থেকে বঞ্চিত শিক্ষক পদপ্রার্থীগণ দীর্ঘদিনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায়৷