প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী অবজ্ঞা করেছিলেন, অতিথি অধ্যাপকের পাশে দাঁড়ালেন বিচারপতি

প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী অবজ্ঞা করেছিলেন, অতিথি অধ্যাপকের পাশে দাঁড়ালেন বিচারপতি

high-court-ssc-case-hearing-commission-faces-question

কলকাতা: অতিথি অধ্যাপক নিয়োগ ইস্যুতে আবার সমালোচিত হল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রশাসনের তরফে প্রাক্তন মন্ত্রী মামলাকারী অধ্যাপকের পাশে না দাঁড়ালেও দাঁড়ালেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি। একই সঙ্গে যে মামলা করা হয়েছিল তার প্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ কতকগুলি নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন- প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ, রাজ্যের হলফনামা তলব করল হাই কোর্ট

২০১৮ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর কলেজ অটোনমাস এডুকেশন বিভাগে অতিথি অধ্যাপক হিসাবে নিয়োগ হয়েছিলেন মামলাকারী অধ্যাপক গোপাল অধিকারী। সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে, গোপাল অধিকারী কর্মরত অবস্থায় থাকাকালীন উচ্চশিক্ষা দফতর যে নির্দেশিকা জারি করেছিল তা মেনে এই কলেজ কর্তৃপক্ষ তাঁর নাম উচ্চ শিক্ষা দফতরের কাছে পাঠাননি বলে অভিযোগ। অধ্যাপক গোপাল অধিকারী জানিয়েছেন, রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরের দৃষ্টি তিনি আকর্ষণ করেন এই ব্যাপারে। কিন্তু তাঁর অভিযোগ, এ বিষয়ে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এবং উচ্চ শিক্ষা দফতর কোনও রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি মেদিনীপুর কলেজ অটোনমাসের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানিতে মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, আইন সঙ্গতভাবে ২৩ শে ডিসেম্বর ২০১৯ সালের উচ্চ শিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা অনুসারে গোপাল অধিকারী তার সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকারী এবং সরকারি অনুমোদিত অতিথি অধ্যাপক হিসেবেই সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু তা তিনি পাননি। এই শুনে বিচারপতি কৌশিক চন্দ্র নির্দেশ দিয়েছেন, মামলাকারী অধ্যাপক গোপাল অধিকারীকে সরকারি নির্দেশিকা মেনে সমস্ত সুযোগ সুবিধা থেকে কোনও ভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না। আগামী এক মাসের মধ্যে ডিপিআই’কে নির্দেশ দেন, বিষয়টি বিবেচনা করে মামলাকারীর প্রাপ্ত বকেয়া মিটিয়ে দিতে।

এক সময় রাজ্যের বিভিন্ন কলেজগুলিতে অধ্যাপক এর অভাবে অতিথি অধ্যাপক নিয়েই কলেজের পঠন পাঠন সচল রাখতে কলেজ কর্তৃপক্ষ গুলি। রাজ্যের নামজাদা কলেজগুলির সেই তালিকার বাইরে ছিল না। অতিথি অধ্যাপকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরও একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, কলেজগুলি আর নতুন করে অতিথি অধ্যাপক নিয়োগ করতে পারবেন না, তবে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে অতিথি অধ্যাপক যদি নিয়োগ করতে হয় তাহলে অবশ্যই উচ্চ শিক্ষা দফতরের অনুমোদন নিতে হবে কলেজ কর্তৃপক্ষ গুলিকে। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরও ২০১৯ সালে ডিসেম্বর মাসে একটি নির্দেশিকা জারি করে। সেই নির্দেশিকায় সমস্ত অতিথি অধ্যাপক যারা এই সময়কালে কর্মরত রয়েছেন তাদের চাকরির নিরাপত্তা এবং বেতন কাঠামো তৈরি করে প্রতিটি কলেজের প্রিন্সিপালকে নির্দেশ পাঠানো হয় যে, তাদের নিজস্ব কলেজে কর্মরত অতিথি অধ্যাপকের নাম ডাইরেক্টর অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন এডুকেশন ডিরেক্টরেটের কাছে পাঠাতে হবে। যাতে বিভিন্ন কলেজের অতিথি অধ্যাপকরা ২০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকা বেতন পেতে পারেন এবং অবসরকালীন ৫ লক্ষ টাকা পেতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two + 4 =