মুম্বই: বলিউডি সিনেমায় হিরোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করে বক্সঅফিসে একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন নায়িকারা৷ কিন্তু সিনেমায় কাজ করার ক্ষেত্রে অভিনেত্রীদের ক্ষোভও বিস্তর। কখনও সহ-অভিনেতাদের চেয়ে অনেক কম পারিশ্রমিকে কাজ করতে হয়েছে, কখনও আবার অভিনেতাদের সঙ্গে বয়সের পার্থক্য বিশেষ না থাকলেও নির্দিষ্ট চরিত্রে অভিনয় করা নিয়ে সরব হয়েছেন বি-টাউনের অভিনেত্রীরা।
আরও পড়ুন- দুটি জাতীয় পুরষ্কার পেল এই বাংলা ছবি, গর্বিত বাঙালি
সলমন খান ও অক্ষয় কুমারকে নিয়ে বলিউডে কানাঘুষো, বয়স বাড়লেও তাঁরা এখনও নবীন নায়কের চরিত্রেই অভিনয় করে থাকেন। অথচ তাঁদের সহ-অভিনেত্রীদের বয়স অনেক কম। আবার ‘খিলাড়ি’ই হোক বা ‘ভাইজান’— তাঁদের সমবয়সি অভিনেত্রীরা এখন বড়পর্দায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এমন চরিত্রে অভিনয় করেন যেখানে বয়সের ছাপ স্পষ্ট৷ এই বৈষম্য নতুন নয়৷ এই বৈষম্য হিন্দি আগেও ছিল৷ শ্রীদেবী থেকে শর্মিলা ঠাকুর, এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে অনেক অভিনেত্রীকেই৷ অন-স্ক্রিনে যে অভিনেতার সঙ্গে প্রেমের রসায়ন, সেই অভিনেতার মায়ের ভূমিকাতেও অভিনয় করেছেন তাঁরা।
আশির দশকে বড় পর্দায় বলিউডের শাহেনশা অভিতাভ বচ্চনের সঙ্গে শর্মিলা ঠাকুরের জুটি বেশ নজর কেড়েছিল। এক সঙ্গে বহু সিনেমায় স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তাঁরা। ১৯৮২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দেশ প্রেমী’ ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন অমিতাভ বচ্চন, শর্মিলা ঠাকুর, হেমা মালিনী, প্রেম চোপড়া, উত্তম কুমারের মতো তাবড় তাবড় অভিনেতারা৷ ওই ছবিতে ‘রাজু’র চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বিগ বি৷ আর তাঁর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেম শর্মিলা ঠাকুর।
এই সিনেমা মুক্তির দুই দশক পর ২০০৫ সালে মুক্তি পায় ‘বিরুদ্ধ’৷ অমিতাভ-শর্মিলা দু’জনেই তখন ৬০ পেরিয়েছেন। তখন অমিতাভ বাবার চরিত্রে অভিনয় করা শুরু করেন। অথচ ১৯৮২ সালেই মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করার প্রস্তাব পেয়েছিলেন শর্মিলা৷
১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কভি কভি’ ছবিতে জুটি বেঁধেছিলেন বিগ বি আর বলিউডের ‘ডান্সিং ডিভা’ ওয়াহিদা রহমান৷ কিন্তু, অভিনেত্রী ৪০ বছরের দোরগোড়ায় পৌঁছতেই তাঁর কাছে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব আসা বন্ধ হয়ে যায়। ‘কভি কভি’ মুক্তির দু’বছর পর অমিতাভের সঙ্গে ‘ত্রিশূল’, ‘নমক হালাল’, এবং ‘কুলি’ ছবিতে কাজ করেছিলেন ওয়াহিদা। তিনটি ছবিতেই অমিতাভের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে৷
‘কভি কভি’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রাখী গুলজারও৷ অমিতাভের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন তিনি। জুটি বেঁধে অমিতাভ ও রাখী বড়পর্দায় বহু সিনেমা উপহার দিয়েছেন৷ কিন্তু, ‘শক্তি’ সিনেমায় পুরোপুরি উল্টো স্রোত৷ অমিতাভ তখন ৪০৷ রাখী ৩৫৷ বিগ বি’র থেকে বয়সে ৫ বছরের ছোট হয়েও তাঁর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রাখী।
রাজ কুমার, সুনীল দত্ত ও নার্গিস অভিনীত ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবিটি বক্স অফিসে ব্যাপক আলোড়ন ফেলেছিল। এই ছবিতে সুনীল দত্তের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন নার্গিস।
১৯৬৪ সালে মুক্তি পায় সুনীল দত্ত পরিচালিত ও প্রযোজিত ‘ইয়াদে’৷ এই ছবিতে সুনীল দত্তের অসাধারণ অভিনয় দর্শকদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এই ছবির অন্তিম দৃশ্যে দেখা যায় নার্গিসকে৷ তবে মায়ের ভূমিকায় নয়, ধরা দিয়েছিলেন অভিনেতার স্ত্রীর চরিত্রে৷
শুধু বলিউড নয়, দক্ষিণী সিনেমাতে একই পরিস্থিতির সম্মুখীন অভিনেত্রীরা। বলিউডে আশি ও নব্বইয়ের দশকে সাফল্যের চূড়ায় থাকা শ্রীদেবী হিন্দি সিনেমার পাশাপাশি অভিনয় করেছিলেন তামিল, তেলুগু, মালয়লম, কন্নড় ছবিতেও৷ ১৯৭৬ সালে মুক্তি পায় তামিল ছবি ‘মুন্দ্রু মুরিচু’৷ ওই ছবিতি অভিনয় করেথিলেন ‘থালাইভা’ রজনীকান্ত৷ শ্রীদেবীর বয়স তখন মাত্র ১৩ বছর৷ ওই বয়সেই রজনীকান্তের সৎ মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ‘চান্দনি’। সেই সময় রজনীকান্তের বয়স ছিল ২৬ বছর।
রজনীকান্ত ও শ্রীদেবীর জুটি আবার বড়পর্দায় ফিরে আসে ১৯৮৯ সালে৷ চালবাজ’ ছবিতে রোম্যান্টিক মুডে ধরা দেন তাঁরা৷ এই ছবিতে শ্রীদেবী দ্বৈত চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>