বাংলা বাঁচাতে ‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’, গেরুয়া হয়েই হুংকার শুভেন্দুর

বাংলা বাঁচাতে ‘তোলাবাজ ভাইপো হঠাও’, গেরুয়া হয়েই হুংকার শুভেন্দুর

মেদিনীপুর: জল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বিজেপিতে যোগদান করলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ অমিত শাহের উপস্থিতিতে ঘাসফুল ছেড়ে গেরুয়া হলেন তিনি৷ এদিন মেদিনীপুরের কলেজ মাঠে বিজেপি সদস্য হিসাবে প্রথম বক্তব্য রাখলেন গণ আন্দোলনের নেতা৷ বিজেপি’র সেই মঞ্চ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু অধিকারী৷ 

আরও পড়ুন- জল্পনার অবসান, অমিত শাহের উপস্থিতিতে ‘গেরুয়া’ হলেন শুভেন্দু অধিকারী

ভরতীয় জনতা পার্টির পরিবারে প্রাথমিক সদস্য হিসাবে যোগদান করার পর শুভেন্দু অধিকারী সবার আগে ধন্যবাদ জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে৷ নিজের দাদা বলেই অমিত শাহকে সম্বোধন করেন তিনি৷ হাজার হাজার মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে অমিত শাহের ভূয়সী প্রশংসা করেন শুভেন্দু৷ নিজের ক্ষোভ উগড়ে দেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে৷ তিনি বলেন, ‘‘ যাঁদের জন্য ২১ বছর কাজ করেছি, যাঁদের জন্য গ্রামে গ্রামে ঘুরেছি, আমি যখন কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলাম তখন তাঁরা আমার খোঁজ নেয়নি৷ কিন্তু অমিতজি দু’বার আমার খোঁজ নিয়েছেন৷ তার জন্য অমিত শাহকে কোটি কোটি প্রণাম জানাই৷’’ অমিত শাহের পাশাপাশি কৈলাস বিজয়বর্গীয়কেও সুসংগঠক হিসাবে মন্তব্য করেন তিনি৷ তাঁর কথায় উঠে আসে মুকুল রায়ের নামও৷ 

এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘‘মুকুল রায় সব সময়ই আমাকে উৎসাহিত করেছেন৷ বলেছেন, শুভেন্দু আত্মসম্মান বোধ থাকলে তৃণমূলে থাকবি না৷ চলে আয়৷ আমরা সম্মান নিয়ে বাঁচব৷ তাঁর কথা আজ আমি রাখতে পেরেছি৷’’ কাজ করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘সবে শুরু করলাম৷ ২৪ ঘণ্টা সময় দিন বুথে বুথে পাড়ায় পাড়ায় পাবেন৷’’ তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘‘মাতব্বরি করতে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে আসিনি৷ খবরদারিও করব না৷ একজন কর্মী হিসাবে দলের নির্দেশ পালন করব৷ পতাকা লাগাতে বললে লাগাব৷ দেওয়ার লিখন করতে বললে করব৷’’ ছাত্র রাজনীতি থেকে গণআন্দোলনের নেতা হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু৷ সিঁড়ি ভেঙেই পৌঁছেছেন রাজনীতির এই শিখড়ে৷  

আরও পড়ুন- সফল ‘দুয়ারে সরকার’, ১ কোটিরও বেশি মানুষ নাম লিখিয়েছেন ক্যাম্পে, টুইট মমতার

তাঁর হুংকার, ভারতীয় জনতা পার্টিই নির্বাচনে প্রথম হবে এবং সরকার গড়বে৷ কোনও মতেই ক্ষমতায় আসবে না তৃণমূল৷ রাজ্য রাজনীতিতে বিজেপি  কর্মীরা যে আত্মবলিদান দিয়েছেন তা বিফল হবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷ শুভেন্দু বলেন, ‘‘ব্যক্তি কেন্দ্রিক দলে আত্মসম্মান নিয়ে কেউ থাকতে পারে না৷ যেখানে আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই, যেখানে সম্মান নেই সেখানে থাকব না৷’’ বেশ কিছু দিন ধরেই উঠে আসছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মা বলে সম্বোধন করার প্রসঙ্গটি৷ এদিন শুভেন্দু বলেন, ‘‘যে আমাকে জন্ম দিয়েছেন তিনিই আমার মা৷ আর একজন মা হলেন ভারতমাতা৷ কাউকে মা বলতে হলে ভারত মাতাকেই মা বলব৷ অন্য কাউকে মা বলতে পারব না৷’’ 

কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসূচি নিয়েও এদিন তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়ান শুভেন্দপ অধিকারী৷ তিনি বলেন, রাজ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলি চালু করা হয়নি৷ কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়া হয়েছে৷ যে দেশে বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য রয়েছে সেখানে অমিত শাহকে বহিরাগত বলা হচ্ছে৷ আমরা আগে  ভারতীয়, পড়ে বাঙালি৷ এই বহুত্ববাদ নষ্ট করতে দেব না৷ তিনি চান, দিল্লি আর বাংলায় এক সরকার থাকুক৷ তা না হলে বাংলা বাঁচবে না বলেও মন্তব্য করেন শুভেন্দু৷ তিনি বলেন, অর্থনীতি শেষ হয়ে গিয়েছে৷ বেকারদের চাকরি নেই৷ চলছে নিয়োগ দুর্নীতি৷ এর থেকে বেরতে হলে প্রধানমন্ত্রীর হাতে বাংলাকে তুলে দিতে হবে৷ আগে বলেছি বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও, এখন একটা কথাই বলব, তোলাবাজ ভাইপো হঠাও৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + 8 =