বাজেটে হিসেবের গড়মিল! অঙ্ক মিলিয়ে শাসক দলকে তুলোধোনা বামেদের

বাজেটে হিসেবের গড়মিল! অঙ্ক মিলিয়ে শাসক দলকে তুলোধোনা বামেদের

কলকাতা: শাসক দলের ভোট অন অ্যাকাউন্ট আগেই বয়কট করেছিল বাম-কংগ্রেস জোট৷ এদিন সাংবাদিক বৈঠকে বাজেটের একাধির গলদ তুলে ধরলেন বাম পরিষদীয় মন্ত্রী সুজন চক্রবর্তী৷ 

আরও পড়ুন- ভোটের মুখে রাজ্য পুলিশে বড়সড় রদবদল, ২৪ পুলিশকর্তাকে বদলি

তিনি বলেন, এটি এক কথায় কোনও বাজেটই নয়৷  তিন মাসের জন্য ভোট অন অ্যাকাউন্টে নতুন কোনও প্রকল্প হওয়ার কথা নয়৷ ফলে এটা কোনও ভাবেই যুক্তিগ্রাহ্য নয়৷ অভিযোগ, হিসাবে মিলছে না এমন সমস্ত বস্তাপচা অঙ্ক নিয়ে এসে কার্যত বাজেট শব্দটিকেই কলুষিত করা হয়েছে৷   

তোপ দেগে সুজনবাবু বলেন, এখানে এমন সব তথ্যের ভ্রান্তি রয়েছে যে অর্থমন্ত্রী নিজে এই বাজেট পড়ার হিম্মত দেখাননি৷ এই বাজেট কে লিখেছে তা জানা নেই৷ তবে এটা শুধুই প্রতিশ্রুতি৷ কল্পতরু বা প্রকল্পতরু করে দেওয়া হয়েছে এই বাজেটকে৷ এটা তো নির্বাচনী ইস্তেহার৷ যা বিধানসভা থেকে না পড়ে কালিঘাট থেকে পড়া উচিত ছিল৷ 

তিনি বলেন, এই বাজেটে সব কিছু চার-পাঁচ-ছয় গুণ বৃদ্ধি দেখানো হয়েছে৷ অথচ সামগ্রিক বৃদ্ধি ২.৭ গুণ৷ এটা কী ভাবে হল, সরকারকে তা স্পষ্ট করতে হবে৷ তাঁর অভিযোগ, সোশ্যাল অডিট শব্দটিকে কার্যত রাজ্য সরকার তার অভিধান থেকে তুলে দিয়েছে৷ এই বিষয়ে কয়েকদিন আগে চিঠিও দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান৷ সুজনবাবু বলেন, যাঁরা অডিট করবে তাঁদের কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না৷ মিথ্যে অঙ্ক দিয়ে সরকার চলছে৷ 

আরও পড়ুন- রেল যাত্রীদের জন্য সুখবর! বদলাচ্ছে রেলের যাত্রী ও পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা

সর্বশিক্ষা মিশেন যাঁরা কাজ করে কে তাঁদের কথা বলবে? পার্শ্বশিক্ষকদের কালকেও বেধরক মারা হয়েছে৷ কলেজ কর্মচারীরা দু’মাস অবস্থান বিক্ষোভ করেছে৷ অথচ সরকারের তরফে তাঁদের সঙ্গে দেখা করার মতন কেউ নেই৷ সব ক্ষেত্রে বঞ্চনা হচ্ছে৷ রাস্তার অঙ্কও ভুল দেওয়া হয়েছে৷ দাবি সুজন চক্রবর্তীর৷  

তিনি জানান, ডিএ এবং নিয়োগ না করে সরকার ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা বঞ্চনা করেছে৷ অথচ এই সরকার ঋণ নিয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা৷ তাঁর কথায়, সরকার সার্কাসে পরিণত হয়ছে৷ জনবিরোধী অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে সরকারকে৷ সেকারণেই বাজেট নয়, নির্বাচনী ইস্তেহার পেশ করা হয়েছে৷

হিসাব মিলিয়ে তিনি বলেন, বাজেটে বলা হয়েছে তফশিলি জাতি-আদিবাসীদের জন্য পাঁচ বছরে ২০ লক্ষ স্থায়ী বাড়ি তৈরি করা হবে৷ অর্থাৎ বছরে গড় ৪ লক্ষ বাড়ি৷ এর জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা৷ ৮ লক্ষ দিয়ে ভাগ করলে হয় সাড়ে ৩৭ হাজার টাকা৷ এই টাকায় স্থায়ী বাড়ি? এই অঙ্ক কে করছে? এটা কি প্রহসন নয়? প্রশ্ন তাঁর৷  

আরও পড়ুন- শোভন-বৈশাখীর রোড শো ঘিরে চরম অশান্তি, কালো পতাকা, ঝাঁটা, জুতো হাতে বিক্ষোভ

তিনি আরও বলেন, বাজেটে বলা হয়েছে ১০ বছরে ১ কোটি সাড়ে ১২ লক্ষ চাকরি দেওয়া হয়েছে৷ গত বছর পর্যন্ত বাজেটে বলা হয়েছিল ১ কোটি ৩০ লক্ষ চাকরি হয়েছে৷ এবছর বাজেটে তা কমে ১ কোটি ১২ লক্ষ হয়ে গেল কী ভাবে? এছাড়াও বনসহায়ক পদে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী৷ যার জবাবে প্রাক্তন বনমন্ত্রী বলেছেন কার কথায় হয়েছে? তালিকা এসেছিল নবান্ন থেকে৷ এর অর্থ দুর্নীতি হয়েছে৷ এই অবস্থায় নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত বলেই দাবি তাঁদের৷  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × four =