মইদুলের মৃত্যুর প্রতিবাদে বামেদের তুমুল বিক্ষোভ, ‘মৃত্যু চাইছিল ওঁরা’, বিস্ফোরক সুব্রত

মইদুলের মৃত্যুর প্রতিবাদে বামেদের তুমুল বিক্ষোভ, ‘মৃত্যু চাইছিল ওঁরা’, বিস্ফোরক সুব্রত

কলকাতা:  কলকাতার নার্সিংহোমে বামেদের নবান্ন অভিযানে আহত বাম কর্মীর মৃত্যু ঘিরে উত্তপ্ত শহর৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখানো হয়৷ পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বাম কর্মীরা৷ আগামী কয়েকদিন কালা দিবস পালন করা হবে বামেদের তরফে৷ বিকেল থেকে পথে নেমে আন্দোলন করবে এসএফআই৷ ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরকার যে ভাষা বোঝে এইবার সেই ভাষাতেই কথা হবে।’’

আরও পড়ুন-  ‘জয় বাংলা’র পর ‘খেলা হবে’! তৃণমূলের স্লোগানে পর্দাফাঁস শুভেন্দুর

এদিন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃত বাম কর্মী মইদুল ইসলাম মিদ্যার ময়নাতদন্ত হবে৷ বামেদের নবান্ন অভিযানের দিন ওই যুব কর্মীকে পুলিশ ব্যাপক মারধর করে৷ সেই মারধরের পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে বাঁকুড়ার কোতলপুরের বাসিন্দা বছর ৩১ এর মইদুল ইসলাম মিদ্যা৷ তাঁকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় বাম নেতা তথা চিকিৎসক ফুয়াদ হালিমের ক্লিনিকে৷ কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ক্যামাক স্ট্রিটের একটি নার্সিংহোম ভর্তি করা হয়৷ আজ ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর৷ 

এদিন পুলিশ মর্গের সামনে বিক্ষোভ দেখায় বাম কর্মীরা৷ মৌলালিতে পুলিশের উপর হামলা হয়৷ ছেঁড়া হয় উর্দি৷ পুলিশের সঙ্গে তৃণমূলের গুণ্ডারা মিশে ছিল বলে দাবি তোলে এসএফআই৷ এই ঘটনায় বাম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশই মইদুলকে খুন করেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিখন্ডি হিসাবে পুলিশকে ব্যবহার করেছে৷ এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে রাজ্যের ছাত্র যুবরা৷ যুব সমাজকে কাজ দিতে পারেনি৷ সর্বত্র দুর্নীতি হয়েছে৷ আর এখন লাঠিপেটা করেছে৷’’  

এর পাল্টা জবাবে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এখনকার পুলিশ অনেক সংযত৷ বরং পুলিশকে লক্ষ্য করে ইঁট মারা হয়েছে৷ বাম নেতারা প্ররোচনা দিয়ে পুলিশের দিকে তাঁদের কর্মীদের ঠেলে দিয়েছে৷  ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই জনসভীর মঞ্চ ছিল৷ সেখানে বক্তৃতা শুনতে গিয়েছিল মানুষ৷ আর এখানে অভিযানের নামে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা হয়েছে৷ হেঁটে গিয়ে কি নবান্নে উঠবেন?’’ প্রশ্ন তোলেন কুণাল৷ তিনি আরও বলেন, ছাত্রযুব কর্মীদের ব্যবহার করেছেন সিপিএমের কিছু নেতা৷ 

প্রসঙ্গত, এদিন তিনটি দাবি রাখা হয়েছিল বামেদের তরফে৷ ময়নাতদন্তের সময় পরিবারের সদস্য, আইনজীবী উপস্থিত থাকবেন৷ এবং ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফি করা হবে৷ এই তিনটি দাবিই মেনে নেওয়া হয়েছে৷ মইনুলের ভাই এবং ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য আধিকারিকরা হাসপাতালে ভিতরে ঢুকেছেন৷ ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে চলবে ময়নাতদন্ত৷ অন্যদিকে, থানার বাইরে চলবে বিক্ষোভ। বামেদের দাবি, চক্রান্ত করে খুন করেছে পুলিশ৷  

আরও পড়ুন-  প্রকাশ পেল মুখ্যমন্ত্রীর লেখা গান! সরস্বতী পুজোর আগেই মমতার নতুন ‘উপহার’

অন্যদিকে বিস্ফোরক দাবি করেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, নবান্ন অভিযান নিয়ে সিপিএম একটা মৃত্যু চেয়েছিল৷ তিনি বলেন, যে কোনো মৃত্যুই দুঃখজনক। কিন্তু সেইদিন যেভাবে গন্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল তাতে এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটা স্বাভাবিক। ওঁরা একটা মৃত্যু চাইছিল৷ 

অন্যদিকে বাম ও কংগ্রেস এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছে। আজ বিধানসভায় এক যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের উপরে অত্যাচার করে মৃত্যু ডেকে আনা স্বৈরাচারী সরকারের কাজ। এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে৷ অন্যদিকে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে বলেন পুলিশই তাঁকে খুন করেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে দল তীব্র আন্দোলনে সামিল হবেন বলেও তিনি জানান। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × five =