সিঙ্গুর: গত শনিবার থেকে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন শুরু হয়ে যাওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারের ঝাঁজ আরো বেশি বেড়েছে। নন্দীগ্রাম থেকে এবার প্রার্থী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই অদ্ভুতভাবে সিঙ্গুর নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ মমতা আগেই দাবি করেছিলেন যে তিনি ভেবেছিলেন এবারের বিধানসভা নির্বাচনের নন্দীগ্রাম বা সিঙ্গুর, কোন একটি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে দাঁড়াবেন। তবে তিনি কেন নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়ালেন, তা এদিনের সিঙ্গুরের জনসভা থেকে আরো একবার স্পষ্ট করে দিতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দাবি করলেন, মাস্টারমশাই শোনেননি, তাই তিনি দাঁড়াননি।
সিঙ্গুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বেচারাম মান্নার সমর্থনে এ দিন এখান থেকে জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, গত বছর তিনি চেয়েছিলেন সিঙ্গুর থেকে বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে। সেই কারণে তিনি বেচারাম মান্নাকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন যাতে তিনি মাষ্টারমশাইকে বোঝান। কিন্তু মমতা দাবি করেন, মাস্টারমশাই শোনেননি, তাই তিনি সিঙ্গুর থেকে দাঁড়াননি। মমতার কথায়, “আমি ভেবে পাই না কী করে মাস্টারমশাই দাঁড়ান বিজেপির হয়ে। আমি মাস্টারমশাইকে সম্মান জানাই। আমি এতদিন তাঁকে জিতিয়ে নিয়ে এসেছি এবং আমি নিজে বলেছিলাম, মাস্টারমশাই আপনি যেহেতু আমাদের সকলের থেকে বয়জ্যেষ্ঠ, তাই আপনি আমাদের পরামর্শ দিন, আপনাকে কোন এক উপদেশ কমিটির চেয়ারম্যান করে দেব, আপনি সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন।” এই প্রসঙ্গে মমতা দাবি করেন, গত বছর তিনি চেয়েছিলেন সিঙ্গুর থেকে বিধানসভা নির্বাচনে লড়তে, কিন্তু অবশেষে মাস্টারমশাই কথা শোনেননি। পরবর্তী ক্ষেত্রে তিনি অনুরোধ জানিয়েছিলেন যে আগামী পাঁচ বছর বেচারামকে এখানে কাজ করতে দিতে, কবে সেই অনুরোধ কোন কাজে লাগেনি।
আরও পড়ুন- ১,৬০০ জওয়ান মোতায়েন করার পরিকল্পনা! নন্দীগ্রাম ‘ঘুম ওড়াচ্ছে’ কমিশনের
এর পাশাপাশি আন্দোলনের কথা বলতে গিয়ে স্মৃতিচারণ করে মমতা বলেন, আন্দোলনের সময় মার খেয়ে তাঁর বুকে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আমারণ অনশন পর্যন্ত করেছেন সিঙ্গুরের জন্য। একইসঙ্গে জানান, তাঁকে অনেক অসম্মান করা হয়েছিল কিন্তু তিনি ঠিক করেছিলেন মানুষকে জেতাবেন নয় তো মরবেন। এমনকি সন্তোষী মার কাছে মানত করেছিলেন যে সিঙ্গুর আন্দোলন জিতলে মন্দির বানিয়ে দেবেন, মন্দির বানিয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মমতা।