কলকাতা: ধীরে ধীরে গোটা গ্রামটাকেই যেন গিলে খাচ্ছে নদীটা৷ বন্যার জলে যা ক্ষতি হওয়ায় তা তো হয়েইছে৷ এবার হোগল নদীর স্রোতে তলিয়ে গেল প্রায় ২৯টি বাড়ি৷ জলের ধাক্কায় ফুটিফাটা কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া পাকা রাস্তাটা৷ জলের ধাক্কায় ঝুপ ঝুপ করে ভেঙে পড়ছে কংক্রিকেট টুকরো৷ পুজোর মুখে ঘর বাড়ি হারিয়ে বুক ফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সুন্দরবনের বাসন্তী ব্লকের রাধাবল্লভপুর এলাকার মানুষগুলো৷
আরও পড়ুন- হাইকোর্টের পুজো সংক্রান্ত নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা
জলের তলায় কোথাও ভাসছে ভাঙা বাড়ির চাল, কোথাও ভাসছে উপড়ে পড়া গাছ৷ হোগলের কোল থেকে কোনও মতে মাথা তুলে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছি কাচা-পাকা বাড়িগুলি৷ এক সময় এখানেই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকত তারা৷ কিন্তু শুক্রবার কাকভোরে আচমকা ধসে নদীর জলে তলিয়ে যায় বাড়িগুলি৷ বাড়ির ভিতর মানুষগুলো তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন৷ কিছু বোঝার আগেই ধসের মুখে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে তাঁদের মাথা গোঁজার আশ্রয়৷
এদিকে এই ঘটনায় এলাকায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে৷ ভয়ে বহু মানুষ গ্রাম ছাড়তে শুরু করেছে৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন সেচ দফতরের আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা৷ স্থানীয় মানুষের কথায়, প্রায় ২৫টি বাড়ি জলের তলায় চলে গিয়েছে৷ যদিও সরকারি অফিসাররে সেই হিসেব মানতে নারাজ৷ তাঁদের কথায়, খুব বেশি হলে গোটা ১৫ বাড়ি হোগলের জলে তলিয়ে গিয়েছে৷ তবে কোনও রকম ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রশাসন৷ তড়ি ঘড়ি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আশেপাশের বাসিন্দাদের৷
ভিটে মাটি হারিয়ে মানুষগুলো আশ্রয় নিয়েছে খোলা আকাশের নীচে৷ খোলা হয়েছে কিছু ত্রাণ শিবির৷ সেখানে ঠাঁই নিয়েছে কিছু মানুষ৷ বিপদের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে রাধাবল্লভপুর, সজিনাতলা, চন্দ্রকোনা এলাকার বাড়িগুলি৷ যে কোনও সময় সেগুলি তলিয়ে যেতে পারে নদীর গর্ভে৷ গত বছরেও এই সময় ধস নেমেছিল হোগল নদীতে৷