মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় ‘চপ শিল্প’! আলু-ভেজিটেবল চপ ভাজে এমএ পাশ যুবক

মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় ‘চপ শিল্প’! আলু-ভেজিটেবল চপ ভাজে এমএ পাশ যুবক

01c6a6ebb0f9dcc8a338c168c9b678b1

পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার বান্দোয়ান৷ সেখানে রাস্তার ধারেই রয়েছে বিশ্বজিৎ করমোদকের চপের দোকান৷ দোকানের নাম দিয়েছেন ‘চপ শিল্প’৷ হরেক রকম চপ রয়েছে তাঁর দোকানে৷ পাঁচ টাকায় আলুর চপ, ছ’টাকায় ভেজিটেবল চপ৷ রয়েছে ঘুঘনিও৷ এক প্লেট ঘুমনির দাম মাত্র পাঁচ টাকা৷ দোকানের মালিক বিশ্বজিৎ বাংলায় এমএ৷ ব্লক প্রশাসনের চুক্তি ভিত্তিক কর্মী৷ বয়স ৩৩৷ 

আরও পড়ুন- তৃণমূলে শ্রাবন্তী? মদন-রাজের ইঙ্গিত তেমনই! নুসরত বললেন, পাশে আছি

বিশ্বজিৎ মানবাজারের মানভূম কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি পাওয়ার পর ২০১০ সালে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষায় স্নাতকোত্তর হন৷  ‘ডিপ্লোমা ইন এলিমেন্টারি এডুকেশন’ (ডিএলএড) কোর্সও করেছেন তিনি৷ স্কুলে চাকরির আশায় টেট পরীক্ষাতেও বসেছিলেন৷ কিন্তু নির্বাচিত হননি৷ বছর খানেক আগে বান্দোয়ান ব্লকের ‘ভিলেজ রিসোর্স পার্সন’ (ভিআরপি) হিসেবে কাজ শুরু করেন৷ সঙ্গে চলে টিউশন৷ 

বিশ্বজিতের কথায়, ‘তেলভাজার দোকান দিয়েও যে সাবলম্বী হওয়া যায়, মুখ্যমন্ত্রী অনেকদিন আগেই সে কথা বলেছিলেন৷ কাজ শুরু করার পর বুঝতে পারছি দিদি ভুল কিছু বলেননি৷ দিনে এখন দুই থেকে আড়াই হাজার টাকার বিক্রি হয়৷ সব খরচা বাদ দিয়ে হাতে পাঁচ-ছ’শো টাকা থাকে৷’

বিশ্বজিৎ ভিআরপি হিসাবে কাজ করার পাশাপাশি টিউশনও পড়ান৷ কিন্তু লকডাউনে বহু অভিভাবকই কাজ হারান৷ ফলে বাকি পড়তে থাকে টিউশনের ফি৷ ভিআরপি-র কাজ করে মাসে পাঁচ হাজার টাকা ভাতা মেলে৷ তাও আবার অনিয়মিত৷ কয়েক মাস আগে বিয়েও করেছেন বিশ্বজিৎ৷ সংসার চালানোর চিন্তা আরও বেড়েছে৷ এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ মাথায় আসে৷ সেই পরামর্শ মেনই ঠেলা গাড়িতে চপের দোকান খোলেন বিশ্বজিৎ৷ দৈনিক দেড়শো টাকায় একটি ছেলেকে কাজেও রেখেছেন ৷ ভিআরপি-র কাজে বেরলে ওই যুবকই দোকান সামলান৷

যদিও এমএ পাশ ছেলে চপের দোকান খোলায় অনেকেই ভালোমন্দ কথা শুনিয়েছেন বিশ্বজিৎকে৷ অনেকে আবার উৎসাহ জুগিয়েছেন৷ বান্দোয়ানের প্রাক্তন শিক্ষক শক্তিপদ দাসেরা বলেন, ‘‘কোনও কাজই ছোট নয়। বিশ্বজিৎ চপের দোকান খুলে সেটাই প্রমাণ করে দিয়েছেন৷’’ কেউ আবার বলছেন, বিশ্বজিৎ সৎ ছেলে৷ পরিশ্রম করে উপার্জন করছে৷ এতে অসুবিধা কোথায়৷ তবে কটাক্ষ করে পুরুলিয়ায় বিজেপি’র জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্যে শিল্প নেই। চাকরি নেই৷ বাংলার শিক্ষিত বেকাররা চপ-শিল্প ছাড়া, আর কী করবে?’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *