রামপুরহাট: উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হওয়ার পরই সোমবার গভীর রাত থেকে জ্বলতে শুরু করেছে রামপুরহাটের বগটুই গ্রাম৷ সোমবার রাতে দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া বোমার আঘাতে মৃত্যু হয় রামপুরহাটের গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখের। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকালে থেকেই মৃত উপপ্রধানের অনুগামীরা এলাকায় তাণ্ডব চালাতে থাকে বলে অভিযোগ। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় একের পর এক বাড়ি। মৃত্যু হয়েছে অনেকের। ৮ জনের দেহ ইতিমধ্যেই সৎকার করা হয়েছে। কিন্তু এই নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। জানা গিয়েছে, জনৈক আলাউদ্দিন শেখ নিজেকে মৃতদের দূর সম্পর্কের আত্মীয় পরিচয়ে দেহগুলি শনাক্ত করেন। তার পর জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের উপস্থিতিতে সমাধিস্থ করা হয় মৃতদেহ। কিন্তু এই আলাউদ্দিন শেখ কে? এই প্রশ্ন ঘুরপাক ইতিউতি।
আরও পড়ুন- সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ করার চেষ্টা, রামপুরহাটের ঘটনায় সরব পার্থ
রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে দেহগুলির ময়নাতদন্তের পর গ্রামে নিয়ে যান প্রশাসনের আধিকারিকরা। সেখানে জেলাশাসকের উপস্থিতিতে তাদের শেষকৃত্য হয়। দাবি করা হচ্ছে, বিক্ষোভ এড়াতেই রাতের অন্ধকারে দেহ সৎকার করা হয়েছে। কিন্তু যে মৃতদেহ শনাক্ত করল তার পরিচয় নিয়েই বিতর্ক। হামলার শিকার হওয়া এক পরিবার এই মুহূর্তে বগটুই ছেড়ে সাইথিয়া গিয়ে উঠেছে। তাদের বক্তব্য, আলাউদ্দিন শেখের সঙ্গে মৃতদের কোনও সম্পর্কই নেই। তাই তারা প্রশ্ন তুলছে যে, সে তাহলে কার অনুমতি নিয়ে, কী ভিত্তিতে মৃতদেহ শনাক্ত করল? পাশাপাশি আরও প্রশ্ন, রাতের অন্ধকারে কেন তাড়াতাড়ি মৃতদেহ সৎকার করা হল। এই প্রেক্ষিতেই তারা সকলে সিবিআই তদন্ত চাইছে। রাজ্য পুলিশের ওপর তাদের ভরসা নেই।
রামপুরহাটের বগটুই গ্রামের পুড়ে যাওয়া বাড়ি এবং এলাকা পর্যবেক্ষণের পর সিট বলছে, দুর্ঘটনা নয়, আগুন লাগানো হয়েছিল। কারা লাগিয়েছেন, তা তদন্ত করে দেখা হবে। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা এই গ্রাম ও পাশের গ্রামের বাসিন্দা। যাদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল তাদের ময়নাতদন্ত হয়। তবে কোনটি পুরুষের দেহ এবং কোনটি নারীর, সেটি চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। ময়নাতদন্ত থেকে নিয়ে আসার পর দেহগুলির সৎকারের ব্যবস্থা করে প্রশাসন। রাত ৯ টার পর সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়।