রক্তে ভাসছে ক্যানিং, নৃশংস ভাবে খুন ৩ তৃণমূল নেতাকে, এর নেপথ্য কারণ কী?

রক্তে ভাসছে ক্যানিং, নৃশংস ভাবে খুন ৩ তৃণমূল নেতাকে, এর নেপথ্য কারণ কী?

36ae8c3d4d7e62b741f9d5547160674f

কলকাতা: হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড৷ ২১ জুলাইয়ের আগে পঞ্চায়েত সদস্য সহ খুন ৩ তৃণমূল নেতা৷ ক্যানিংয়ের জনবহুল এলাকায় গুলি, এলোপাথাড়ি ভাজালির কোপ৷ মাথা কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা৷ পুলিশের অনুমান, ওই তিনজন নেতা এই রাস্তা দিয়েই যাবেন, আগাম খবর ছিল দুষ্কৃতীদের কাছে৷ রাস্তার ধারে সবজি খেতে চাষি সেজে অপেক্ষা করছিল আততায়ীরা৷ ঘটনাস্থলে রয়েছে সিআইডি৷ উদ্ধার একটি তাজা বোমা ও তিনটি গুলির খোল৷ অকুস্থলে এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সিদ্ধিনাথ গুপ্ত৷ যান বারুইপুর পুলিশ, দেলার পুলিশ সুপার ও আইজি প্রেসিডেন্সি রেঞ্জ৷

আরও পড়ুন- গাড়ি নিয়ে নয়া নিয়ম চালু, সিকিমে স্বস্তি পাবে বাংলার পর্যটকরা

এদিন সকালে বাড়ি থেকে দলীয় দফতরের উদ্দেশে বেড়িয়েছিলেন গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য স্বপন  মাঝি এবং এলাকার দুই বুথ সভাপতি ভূতনাথ প্রামাণিক ও ঝন্টু মাঝি। তাঁরা তিনজনই গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধর্মতলা এলাকার বাসিন্দা। আজ সকালে বাইকে চেপে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতি সভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলেন তাঁরা৷ সেই সময় স্বপনের পথ আটকায় দুষ্কৃতীরা। তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়৷ মৃত্যু নিশ্চিত করতে বসানো হয় এলোপাথাড়ি ভোজালির কোপ। সেই সময় পালানোর চেষ্টা করেন ভূতনাথ এবং ঝন্টু৷ কিন্তু পালাতে পারেননি৷ প্রমাণ লোপাটে তাঁদেরও গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, দুষ্কৃতীরা স্বপন এবং তাঁর দুই সঙ্গীর মাথা কেটে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল।

ঘটনার সময় এলাকায় অনেকেই উপস্থিত ছিলেন৷ অকুস্থলের একেবারে সামনেই রয়েছে একটি দোকান৷ ঘটনার সময় সেখানে অনেকেই দাঁড়িয়েছিলেন৷ তাঁদের চোখের সামনেই গোটা ঘটনাটি ঘটে৷  এখনও পর্যন্ত এই ঘটনার পিছনে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণই উঠে এসেছে৷ 

জানা গিয়েছে, এদিন আততায়ীরাও বাইক নিয়ে এসেছিল৷ তিন জনকে নৃশংসভাবে খুন করার পর মাঠ দিয়ে পালিয়ে যায় তারা৷ অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ৷ কিন্তু, কেন এই খুন? খুনের নেপথ্য কারণ হিসাবে উঠে আসছে এলাকা দখলের বিষয়টি৷ পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে মূল অভিযুক্ত হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে রফিকুলের নাম৷ 

সংঘাতের সূত্রপাত বছর দেড়েক আগে৷ এই এলাকার নেতা স্বপন মাঝির এক অনুগামী বাদল নস্করের উপর ৮-৯ মাস আগে একটি হামলার ঘটনা ঘটে৷ হামলা চালিয়েছিল এই রফিকুলই৷ জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই বাদল নস্করকে খুনের চেষ্টা করেছিল সে৷ এর পর তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগও দায়ের হয়৷ কিন্তু, রফিকুলকে ধরা যায়নি৷ এতদিন পুলিশের খাতায় সে ছিলেন পলাতক৷ এদিনের ঘটনার ফের উঠে এল রফিকুলের নাম৷ খুনের চেষ্টা ও খুনের ঘটনা ছাড়াও মাদক মামলাতেও অভিযুক্ত সে৷  

অভিযোগ, স্বপন মাঝির দাপটে এলাকায় ঢুকতে পারত না রফিকুল৷ এলাকায় ঢুকলেই পুলিশের কাছে খবর পৌঁছে যেত৷ পথের কাঁটা সরাতেই ছক কষে খুন করা হয় স্বপন মাঝিকে৷ প্রমাণ লোপাটে খুন করা হয় তাঁর দুই সঙ্গীকেও৷ এমনটাই জানা যাচ্ছে প্রাথমিক তদন্তে৷