‘তৃণমূলের অনেকেই ভোট দেবেন’, দাবি দিলীপের, ২৯৪ বিধায়কের ভোটের আশা মুর্মুর, সমর্থন শিবসেনারও

‘তৃণমূলের অনেকেই ভোট দেবেন’, দাবি দিলীপের, ২৯৪ বিধায়কের ভোটের আশা মুর্মুর, সমর্থন শিবসেনারও

8832501d93230ddbefb7418bab887147

কলকাতা: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে রীতিমতো চমক দিয়ে এক আদিবাসী নেত্রীকে প্রার্থী করেছে এনডিএ শিবির৷ রাজনীতির অঙ্ক কষেই যশবন্ত সিনহার বিরুদ্ধে বিজেপির অন্যতম প্রধান আদিবাসী মুখ তথা ওড়িশার প্রাক্তন মন্ত্রী ও ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ঘোষণা করেছে গেরুয়া জোট৷ ভোটের আগে দু’দিনের বঙ্গ সফরে এসেছিলেন দ্রৌপদী৷ তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানায় গেরুয়া শিবির৷ মঙ্গলবার ছিল দ্বিতীয় দিন৷ 

আরও পড়ুন- ‘মধ্যাহ্নভোজের রাজনীতি’! হাওড়ায় দলীয় কর্মীর বাড়িতে পঞ্চব্যঞ্জনে আহার স্মৃতি ইরানির

এদিন সকাল সকাল তিনি পৌঁছে গিয়েছিলেন সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের বাড়িতে৷ সেখানে স্বামীজিকে ফুল-মালায় শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন দ্রৌপদী৷ এর পর সন্ন্যাসীদের সঙ্গে যোগ দেন বিশেষ প্রার্থনায়৷ রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় স্বামীজির বই, ছবি, একটি শাল ও সারদা দেবীর প্রসাদী শাড়ি। প্রচার সূচির মাঝে এদিন প্রায় আধ ঘণ্টা স্বামীজির ভিটেয় কাটান এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী৷ ঘুরে দেখেন সংগ্রহশালা৷ তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও অগ্নিমিত্রা পল।

স্বামীজির বাড়ি থেকে সোজা বাইপাস লাগোয়া বিলাসবহুল হোটেলে ফিরে আসেন দ্রৌপদী। সেখানে বিজেপি’র জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি৷ আজকের এই সাক্ষাৎপর্বের জন্য বেশ কয়েকদিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি পরিষদীয় দলের তরফে বিশেষ অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল৷ উপস্থিত শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার, শান্তনু ঠাকুর, নিশীথ প্রামাণিক সহ বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। উপস্থিত ছিলেন দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষও৷ দলের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে তাঁর গলায় উত্তরীয় পড়িয়ে দেওয়া হয়৷  পাশাপাশি তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় দেবী দুর্গা ও কালির মূর্তি এবং রবীন্দ্রনাথের বাঁধানো ফটোফ্রেম। বৈঠকে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের আশ্বাস বাংলার ২৯৪ জন বিধায়কের ভোটই পাবেন তিনি৷

এদিকে, মঙ্গলবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পর্কে দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, তৃণমূল কংগ্রেসের অনেক জনপ্রতিনিধি দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দেবেন৷ শাসক শিবিরকে খোঁচা দিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আদিবাসী রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে নিয়ে  উচ্ছ্বসিত গোটা দেশ৷  এখানেই শুধু দুঃখ। বিবেকানন্দ বলেছিলেন, শূদ্রের উত্থান হলে দেশের উত্থান হয়। মাননীয়া  মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আগে জানলে সমর্থন করতাম। মজার ব্যাপার হল, উনি আগেই প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছেন।’’ দিলীপ আরও বলেন, ‘‘একদা তৃণমূলের সহ-সভাপতি  যশবন্ত সিনহা রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে যখন মনোনয়ন দাখিল করেন, সেই সময় নেত্রী নিজেই সেখানে যাননি। আর দ্রৌপদী মুর্মুর মনোনয়নে ছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর থেকে বোঝা যায় কে রাজনীতি করছে। কে সত্যিকারের লড়াই করছে।’’

দিলীপ আরও বলেন, ‘‘যশবন্ত সিনহা নানা রাজ্যে প্রচারে যাচ্ছেন। অথচ এ রাজ্যেই তিনি আসেননি। ওঁকে এভাবে অপদস্থ করার কোনও মানেই হয় না। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আগে জানলে দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করতেন৷ দিদিকে কষ্ট পেতে হবে না৷ কারণ ওঁর পার্টির অনেকেই দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দেবেন।’’

অন্যদিকে, রাজ্যে পালাবদলের পরেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ-র প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করবে বলে জানিয়েছে শিবসেনা। দলের সাংসদরা সোমবারের বৈঠকে দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থনের জন্য শিবসেনা সুপ্রিমো উদ্ধব ঠাকরেকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন। মঙ্গলবার আসন্ন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ-র প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থনের ইঙ্গিত দেন উদ্ধব। যদিও দ্রৌপদী মুর্মুকে সমর্থন করার অর্থ বিজেপিকে সমর্থন করা নয় বলেও  সাফ জানিয়েছে  শিবসেনা৷ 

এ প্রসঙ্গে শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত বলেন, “শিবসেনা যেটা সঠিক বলে মনে করে সেটাই করে। অতীতেও আমরা কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী টি এন শেশান, প্রতিভা পাটিল এবং প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থন দিয়েছি। রাজনীতির বাইরে যাওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে সেনার ইতিহাসে। আমরা জাতীয় স্বার্থে জনগণকে সমর্থন করায় বিশ্বাসী।”