কলকাতা: তাদের গাফিলতির কারণে সামাজিক সম্মানহানি এবং কর্মক্ষেত্রে শিক্ষকদের চাকরি অনিশ্চয়তা হয়েছে। এই অভিযোগে এসএসসি এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে দায়ের হল মামলা। নিয়োগ ইস্যুতে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে সিবিআই। যদিও একাধিকবার হাইকোর্টে তদন্ত নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে তারা। ওদিকে এসএসসি’ও বাদ যায়নি আদালতের প্রশ্ন থেকে। তবে এবার এই দুই সংস্থার বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ আনা হল।
আরও পড়ুন- NEET-এ উজ্জ্বল বাংলার দেবাঙ্কিতা, রাজ্যে তৃতীয় এবং দেশে ২২ তম স্থানে
নবম-দশম শ্রেণির এসএলএসটিতে যে দুর্নীতি তার তদন্ত করছে সিবিআই। হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যত দ্রুত সম্ভব ওএমআর সিট প্রকাশ করতে। সেই নির্দেশ মেনে স্কুল সার্ভিস কমিশন গত ২২ ডিসেম্বর ওএমআর সিট প্রকাশ করে। কিন্তু তার মধ্যে ৯৫২ জনের নম্বরে কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। পরে এই ৯৫২ জন প্রার্থীর নাম, বাবার নাম, স্কুলের নাম, বাড়ির ঠিকানা, সমস্ত কিছু প্রকাশ করতে বলা হয়েছিল যা করে এসএসসি। এই তালিকা প্রকাশের পরেই নীতীশ সরকার সহ ৭ জন কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। তাদের অভিযোগ তালিকায় সঠিক তথ্য দেওয়া হয়নি।
মামলাকারীদের বক্তব্য, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে বিচারপতি শেখর ববি সারাফের নির্দেশ অনুযায়ী ইতিহাসে এক নম্বর বেড়ে কয়েকজন নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়। পরবর্তী সময়ে যোগ্যতার ভিত্তিতেই তারা নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন। সেখানে নম্বর বাড়ানো বা কারচুপি হওয়ার কোনও জায়গা ছিল না বলেই দাবি। তাহলে কী ভাবে তাদের নাম অবৈধ তালিকায় যুক্ত করা হল, এই প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারীরা। এখন তাদের অভিযোগ, গোটা বিষয়ের জন্য তাঁদের এখন সামাজিক সম্মানহানি হচ্ছে এবং কর্মরত স্কুলেও তাঁরা ঢুকতে পারছেন না। গত ২৯ ডিসেম্বর এসএসসি’র মেমোকে চ্যালেঞ্জ করে শেতাবুদ্দিনের মামলায় সংযুক্ত হওয়ার আবেদনও জানিয়েছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন- অবশেষে মিলছে চাকরি! ৬৫ জন ‘যোগ্য’ প্রার্থীদের সুপারিশপত্র দিতে ডাকল এসএসসি
মামলাকারী নীতীশ সরকার, ইলিয়াস বিশ্বাস সহ ৬ জন মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী বলেন, সিবিআই এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের মধ্যে সঠিক তথ্য আদান-প্রদান এবং তথ্য যাচাই না করার কারণে মামলাকারীদের সামাজিক ভাবে সম্মানহানি হয়েছে যা অবাঞ্চিত এবং বেআইনি। কারণ যখন কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত করছে এবং তারই নির্দেশে প্রার্থীদের নম্বর বাড়ানো হয়েছে, সে ক্ষেত্রে সেই প্রার্থীদের অবৈধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা একদম সঠিক নয়। শুধু তাই নয়, এই তালিকা বাতিলযোগ্য। কারণ সমস্ত তথ্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে থাকা সত্ত্বেও তা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেয়নি তাঁরা। আগামী ১১ জানুয়ারি এই মামলার পরের শুনানি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে।