বেড়ে চলেছে অ্যাডিনোভাইরাসের দাপট! ভাইরাস ঠেকাতে কী কী রাখবেন খুদের পাতে

বেড়ে চলেছে অ্যাডিনোভাইরাসের দাপট! ভাইরাস ঠেকাতে কী কী রাখবেন খুদের পাতে

কলকাতা:  রাজ্যে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে অ্যাডিনোভাইরাস৷ গত দেড় মাসে ৫০০-র বেশি নমুনা পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যার মধ্যে ৩২ শতাংশই অ্যাডিনোভাইরাসের শিকার৷ এই ভাইরাসের দাপট এতটাই বেশি যে, উপচে পড়ছে হাসপাতালের বেড৷ শহর থেকে জেলা, সাধারণ শয্যার পাশাপাশি পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট এমনকি ভেন্টিলেটরগুলিও ফাঁক থাকছে না৷ রবিবার পর্যন্ত জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ১১ জন শিশুর। 

আরও পড়ুন- হুমকি দেওয়া হচ্ছে প্রাণনাশের! কী অভিযোগ করলেন সাংসদ দিব্যেন্দু

চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন,  যে সকল শিশুর বয়স দু’বছরের কম, তাদের ক্ষেত্রে ভয়ের পরিমাণ অনেকটাই বেশি। যাদের বয়স এক বছরের কম, তাদের ঝুঁকি আরও বেশি। তাই এই বয়সের শিশুদের অত্যন্ত সাবধানে রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে৷ বাড়ির প্রাপ্ত বয়স্ক কোনও সদস্যের জ্বর-সর্দি-কাশি ও গলাব্যথা হলে  বাচ্চাদের থেকে দূরে থাকুন। কারণ, বড়দের থেকেই শিশুদের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে৷ অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের ফুসফুস ও শ্বাসনালি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণ সর্দি-কাশি থেকে দ্রুত শুরু হয়ে যাচ্ছে শ্বাসকষ্ট৷ ফলে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বাড়ানোর দিকে এখন থেকেই নজর দিতে হবে। সেই সঙ্গে যত্ন নিতে হবে বড়দেরও৷ এই সময় কোন কোন খাবার খেতে হবে, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ 

তেতো: ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে প্রতি দিন অবশ্যই পাতে রাখুন তেতো। নিম পাতা হোক বা উচ্ছে, যে কোনও একটি খাবার খেতেই হবে৷ এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিভাইরাল উপাদান শুধু শরীর মজবুতই রাখে না, এই সময়ে বাতাসে ভেসে বেড়ানো রোগ-জীবাণুর সঙ্গে লড়াই করতেও সাহায্য করে।

পর্যাপ্ত প্রোটিন: শরীর সুস্থ রাখতে চাই প্রোটিন৷ তাই উদ্ভিজ্জ বা প্রাণীজ, যে কোনও রকমের প্রোটিনই খাবার পাতে থাকাটা অত্যন্ত জরুরি৷ এই সময় মাছ, মাংস, সয়াবিন, মুসুর ডাল, ডিম বেশি করে খেতে হবে৷  এ সব খাদ্য থেকে পাওয়া পুষ্টিগুণ শরীরকে ভিতর থেকে মজবুত করবে। 

লবঙ্গ-দারচিনি-কাঁচা হলুদ: ভাইরাস রুখতে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বেশ কিছু মশলাপাতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে৷ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য লবঙ্গ-দারচিনি-কাঁচা হলুদ৷ তাই প্রতিদিনের রান্নায় যোগ করুন লবঙ্গ ও দারচিনি। এই সব মশলাপাতির মধ্যে থাকা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের স্বাভাবিক প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত দারচিনি, লবঙ্গ দিয়ে কাড়া বানিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

কাঁচা হলুদ: কাঁচা হলুদের অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল উপাদানও শরীরকে অনেক রোগের হাত থেকে বাঁচায়। হয় টুকরো করে কেটে চিবিয়ে খান, নয়তো কাঁচা হলুদ বেটে দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খান প্রতি দিন।

রসুন: সকালে খালি পেটে খান এক কোয়া রসুন। স্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, খালি পেটে এক কোয়া রসুন অর্ধেক রোগের কড়া ওষুধ। প্রাকৃতিক ভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে পূর্ণ এই সব্জির একাধিক কার্যকরী দিক রয়েছে। ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে রসুন অনবদ্য৷ 

টক দই: টক দইয়ে থাকা ফারমেন্টেড এনজাইম খাবার হজমের পক্ষে ভীষণই উপযোগী। এছাড়াও টক দইয়ের প্রোবায়োটিক উপাদান লিভারকে সুস্থ রাখে, কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। অনেকেই দুধ পছন্দ করেন না। শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে তাঁরা পাতে রাখুন টক দই৷ 

জল: শরীরে জলের ভাগ কমলে যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে তেমনই ডিহাইড্রেশন থেকে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়৷ শরীর সহজেই হামলা করে ভাইরাস৷ তাই পর্যাপ্ত জল খেতে বলছেন পুষ্টিবিদরা৷