কলকাতা: প্রবল বিতর্কের মুখে আপাতত স্থগিত সিভিক ভলেন্টিয়ারদের প্রাথমিক স্কুলে পড়ানোর সিদ্ধান্ত৷ বাঁকুড়া পুলিশের সিদ্ধান্তে গতকাল থেকে তোলপাড় গোটা রাজ্য৷ এই সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেয়নি স্কুল শিক্ষা দফতর৷ বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনকে অনুমোদনের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷
আরও পড়ুন- জট কাটল না পঞ্চায়েত নির্বাচন মামলার, এখনও অপেক্ষা জারি
বিতর্কের মাঝে সরকারের তরফে এদিন স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হল, বাঁকুড়া পুলিশের এই সিদ্ধান্তে শিক্ষা দফতরের কোনও অনুমোদন ছিল না৷ তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়৷ বলা হয়েছিল, শিক্ষকদের বদলে প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়াদের অঙ্ক ও ইংরেজির ‘বিশেষ’ পাঠ দেবেন সিভিক ভলেন্টিয়াররা৷ বাঁকুড়া পুলিশের ‘অঙ্কুর’ নামে এই প্রকল্প ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়৷ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বলেন, ‘‘স্কুলের পড়া শেষে পড়ুয়াদের অঙ্ক এবং ইংরেজিতে দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশেষ ক্লাস নেওয়া হবে। এই প্রকল্পের জন্য জেলায় প্রায় ১৫০ জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কী ভাবে ছোটদের পড়াতে হবে, একটি সংস্থা সেই প্রশিক্ষণ দেবে।’’
কিন্তু, বাঁকুড়া পুলিশের এই সিদ্ধান্তে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ব্যপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এর পরেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে বাঁকুড়ার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই বিষয়ে আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি। আমাদের মতামত চাওয়ার জন্য ওঁদের বলা হয়েছে। তার পর ভেবে দেখা হবে এটা চালু করা হবে কি না। এখনই এই ব্যবস্থা চালু করা যাবে না।’’ বৃহস্পতিবার সিভিক ভলেন্টিয়ারদের প্রাথমিক স্কুলে পড়ানোর সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রাখা হল।
গতকাল এই খবর চাউড় হতেই খড়্গহস্ত হয়েছিলেন বিরোধীরা৷ সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধূলিস্মাৎ করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে বলে তাঁরা সুর চড়ান৷ শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে একেই তোলপাড় রাজ্য৷ বাতিল হচ্ছে গুচ্ছ গুচ্ছ ভুয়ো শিক্ষকের চাকরি৷ তাঁদের দাবি, সেই সব শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ না করে সিভিক ভলেন্টিয়ার দিয়ে বুনিয়াদি শিক্ষা ব্যবস্থাকে চালিত করতে চাইছে সরকার৷ এই প্রেক্ষাপটে প্রবল বিতর্কের মুখে সরকারের সিদ্ধান্ত, আপাতত স্থগিত থাকবে এই প্রকল্প৷ এই বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে রিপোর্টও তলব করা হয়েছে৷ কেন শিক্ষা দফতরের অনুমোদন নেওয়া হয়নি, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি অনুমোদনের জন্য আবেদনও করতেও বলা হয়েছে৷
উল্লখ্য বিষয় হল, তীব্র বিতর্কের মুখে এই প্রকল্প আপাতত স্থগিত করা হলেও বাতিল করা হয়নি৷ জেলা প্রশাসন নিয়ম মেনে আবেদন করলে, সেই আবেদন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে যাবে৷ পর্ষদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল এই প্রকল্পকে সঠিক মনে করলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ তার পরেই লাগু হবে ‘অঙ্কুর’৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>