কলকাতা: টাইটানিক! একটা দুঃস্বপ্ন! একটা অভিশপ্ত সফর৷ কারণ, বিলাসবহুল এই রণতরীটি তার প্রথম সফরেই তলিয়ে গিয়েছিল সমুদ্রের গর্ভে৷
সালটা ১৯১২৷ ইংল্যান্ডের সাউথহ্যাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সেই সময়ের সবচেয়ে বৃহৎ আধুনিক ও বিলাসবহুল যাত্রীবাহী জাহাজ ‘টাইটানিক’৷ কিন্তু, উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে বিশাল এক হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর মাঝসমুদ্রেই ডুবে যায় জাহাজটি।
আরও পড়ুন- গত তিন সপ্তাহে চারটি! এবার জেগে উঠল গুয়াতেমালার ‘ফুয়েগো’ আগ্নেয়গিরি
বাস্তব এই ঘটনার উপর ভিত্তি করেই ১৯৯৭ সালে জেমস ক্যামেরনের পরিচালনায় তৈরি হয় ‘টাইটানিক’ ছবিটি। কিন্তু, টাইটানিকের এই কাহিনি নাকি বহু বছর আগেই ধরা পড়েছিল উপন্যাসের পাতায়৷ এমনটাই দাবি কনস্পিরেসি থিয়োরিস্টদের। ১৮৮৬ সালে প্রকাশিত ‘দ্য সিংকিং অফ আ মডার্ন লাইনার’ নামে একটি উপন্যাসের পাতায় উল্লেখিত ঘটনার সঙ্গে টাইটানিকের দুর্ঘটনার প্রচুর সাদৃশ্য খুঁজে পাওয়া যায়। এই উপন্যাসটি লিখেছিলেন ডব্লিউটি স্টিড নামের এক সাংবাদিক৷ ওই উপন্যাসে তিনি লিখেছিলেন, লিভারপুল থেকে একটি জাহাজ নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই মাঝ সমুদ্রে ডুবে যায় জাহাজটি৷ লাইফবোট কম থাকার কারণে জাহাজের সকল যাত্রীকে বাঁচানোও সম্ভব হয়নি। অদ্ভুত ভাবে একই রকম ঘটনা ঘটেছিল টাইটানিকের সঙ্গেও!
ওই উপন্যাসের আরও লেখা হয়েছিল, লাইফবোটে ওঠার জন্য জাহাজের ডেকে তখন উপচে পড়েছিল যাত্রীদের ভিড়৷ সকলকে সেখান থেকে সরাতে হিমশিম খেতে হয় জাহাজের ক্যাপ্টেনকে৷ অবশেষে তিনি বন্দুক বার করেন এবং হাওয়ায় গুলি চালান৷ যাত্রীরা ভয় পেয়ে গিয়ে পিছু হঠেন৷ মনে করা হয় এমন ঘটনা টাইটানিকেও ঘটেছিল৷ কারণ, একই রকম দৃশ্য দেখানো হয়েছিল ‘টাইটানিক’ ছবিতেও।
শুধু স্টিডের লেখা উপন্যাসেই নয়, ১৮৯৬ সালে প্রকাশিত আরও একটি উপন্যাসে ‘টাইটানিক’-এর মতোই এক ভয়াবহ ঘটনার কথা উল্লেখ রয়েছে। ওই উপন্যাসটির নাম ‘দ্য রেক অফ দ্য টাইটান’৷ বইটি লিখেছিলেন আমেরিকার লেখক মরগ্যান রবার্টসন৷
মরগ্যান তাঁর বইতে ‘টাইটান’ নামে যে জাহাজের কথা উল্লেখ করেছিলেন, কাকতালীয় ভাবে সেই জাহাজের নামের সঙ্গে মিল রয়েছে টাইটানিকের৷ এই জাহাজটির পরিণতিও হয়েছিল টাইটানিকের মতোই৷ হিমশৈলের সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে ফাউন্ডল্যান্ড এলাকার উপকূলের কাছে ডুবে যায় সেটি।
১৯০৮ সালে এম ম্যাকডোনেল বদকিনের লেখা ‘দ্য শিপ রান’ উপন্যাসেও জাহাজডুবির কথা উল্লেখ করেছেন। সেই জাহাজেরও নাম ছিল ‘টাইটানিক’। বদকিনের লেখা বইটি পড়লে মনে হবে, তিনি যেন ভবিষ্যতকে দেখেছিলেন৷ আগে থেকেই জানতে পেরে গিয়েছিলেন টাইটানিক-এর কথা৷ এই ঘটনার ৪ বছর আগে বইটি লেখা হয়েছিল। তাঁর লেখনিতে জাহাজের গঠনের যে বর্ণনা পাওয়া যায়, যা পড়লে মনে হবে তিনি টাইটানিক জাহাজটি দেখেই বইটি লিখেছেন। বদকিন লেখেন, ওই জাহাজটি আকারে সবচেয়ে বড়। এমনকি সবচেয়ে বেশি যাত্রী বহনে সক্ষম৷
আবার টাইটানিকের সফর শুরুর আগে মেইন ক্লিউ গার্নেট ছদ্মনামে ‘দ্য হোয়াইট ঘোস্ট অফ ডিজাস্টার নামে একটি ছোট গল্প লেখেন থর্নটন জেনকিন্স হেইনস৷ তাঁর গল্পে জাহাজের নাম ছিল ‘অ্যাডমিরাল’৷ ঘণ্টায় ৪২ কিলোমিটার গতিতে ছোটা এই জাহাজটিও হিমশৈলের সঙ্গে ধাক্কা লাগার কারণে ধ্বংস হয়ে যায়৷ ডুবে যায় উত্তর আটলান্টিকে৷ লাইফবোটের অভাবে মৃত্যু হয় অনেক যাত্রীর৷
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>