এবার মায়ের পরিচয়ে সরকারি পরিচয় পাবে সন্তান, অধিকার অর্জনে একধাপ এগোলেন আফগান মহিলারা

এবার মায়ের পরিচয়ে সরকারি পরিচয় পাবে সন্তান, অধিকার অর্জনে একধাপ এগোলেন আফগান মহিলারা

কাবুল: মহিলাদের সেদেশে অধিকার অর্জন করতে হয় লড়াই করে। মহিলারা মানুষের সমকক্ষ কিনা সে নিয়ে প্রশ্নও রয়েছে বিস্তর। এবার সেই আফগান মহিলাদের অধিকার অর্জনের আন্দোলনে এল বিশাল জয়। এখন থেকে আফগানিস্তানের জাতীয় পরিচয়পত্রে বাবার নামের সঙ্গে থাকবে মায়ের নামও। অর্থাৎ শিশুর পরিচয়ে মাও পেতে চলেছেন সমমর্যাদা।

এই অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে আফগান পার্লামেন্টের অধিবেশনে আনা হচ্ছে আইন সংশোধনী বিল। সংশ্লিষ্ট সবস্তরের মানুষের ধারণা এই আইন পাস হয়ে যাবে। পরিচয়পত্রে কেন থাকতে পারবে না মায়ের নাম, কেনই বা আর্থিক লেনদেনের জন্য ব্যাঙ্ক ব্যবহার করতে পারেন না মেয়েরা! প্রথম আওয়াজ তোলেন হেরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক লালে ওসমানি। তাঁর প্রশ্নকে হ্যাশট্যাগে সাজিয়ে দুনিয়ার সামনে আনেন লালে। প্রশ্ন ওঠে #Whereismyname। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রসার ও সাফল্য পায় এই আন্দোলন।

পরুিচয় পত্রে মায়ের নাম না থাকার বিড়ম্বনা সইতে হয়েছে বহু আফগান মানুষকে। বাদ যাননি সমাজের উচ্চস্তরের মানুষজন। ২০১৮ সালে ছেলের সঙ্গে ভারতে এসেছিলেন আফগান শিক্ষাবিদ খুজিস্তা তামান্না। দিল্লি বিমানবন্দরে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, যে ছেলেটি তাঁর সঙ্গে রয়েছে সে তারই ছেলে কিনা। কারণ মা হিসেবে ওই ছেলেটির নথিতে কোনও জায়গায় খুজিস্তার নাম নেই। ফলে প্রমাণ করতে বিস্তর কাঠখড় পোড়াতে হয় তাঁকে। খুজিস্তার মতই বহু আফগান মহিলাকে একাধিক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে।

গোঁড়া পুরুষতান্ত্রিক আফগান আবহে লালে ওসমানির এই লড়াই স্বভাবতই সহজ ছিল না। কিন্তু সেই পুরুষতান্ত্রিকতার গোড়া ধরে টান মারেন তিনি। আফগানিস্তানের মতো যুদ্ধক্লিষ্ট দেশে বহু মহিলা তাঁদের স্বামী হারিয়েছেন। সম্পত্তির অধিকার পেতে তাঁদের প্রবল সমস্যায় পড়তে হয়। বিধবা কিংবা পিতৃহীন মহিলারা পাসপোর্ট তৈরী করাতেও পারতেন না। আইন সংশোধন হলে এবার সেই সমস্যা থেকে রেহাই পাবেন আফগান মহিলারা।

আফগানিস্তানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মহম্মদ হিদায়েত মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সরকারি পরিচয়পত্রে বাবার পাশাপাশি মায়ের নামও থাকবে। অধিকাংশ সাংসদই বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন। শীঘ্রই এনিয়ে আইন তৈরি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *