লাহোর: সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়ার দায়ে এমনিতেই বিশ্বের কাছে কোনঠাসা ইমরানের দেশ পাকিস্তান। এবার এক বর্বরোচিত ঘটনার সাক্ষী থাকল সেই দেশ। সন্তানদের সামনেই মাকে গণধর্ষণ করল একদল দুষ্কৃতি। এই ঘটনায় উত্তাল হয়েছে পাকিস্তান৷ মহিলাদের কতটুকু সম্মান দেওয়া হয় বা তাঁদের রক্ষা করার দায়িত্ব কতটুকু আছে প্রশাসনের সেই নিয়ে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।
পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোর-শিয়ালকোট জাতীয় সড়কে ঘটেছে এই ঘটনা। গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই মহিলা গাড়ি চালিয়ে লাহোর থেকে গুজরানওয়ালার দিকে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই শিশু সন্তানও। হঠাৎ মাঝ রাস্তায় গাড়ি খারাপ হয়ে যায়। সাহায্যের জন্যে জাতীয় সড়কে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। সেই সময় একদল যুবক এসে সাহায্য করার কথা বলে। সাহায্যের জন্যে গাড়ির কাছে এগিয়ে আসে তারা। কিন্তু তারপরেই গাড়ির জানলার কাঁচ ভেঙে মহিলাকে বাইরে টেনে বের করে আনে ওই যুবকেরা। এরপর রাস্তার পাশেই মাঠে নিয়ে গিয়ে যুবকেরা একে একে মহিলাকে ধর্ষণ করে।
ধর্ষণ করার পরেও মহিলাকে রেহাই দেয়নি দুষ্কৃতীরা। এরপর ওই মহিলার টাকা, গয়না, এটিএম কার্ড সমস্ত কিছু লুট করে পালিয়ে যায় ওই যুবকের দল। ঘটনাস্থলের খবর পেয়ে কিছুক্ষন পরে পুলিশ পৌঁছায় সেখানে। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার খবর প্রকাশ্যে আসতেই করাচি, লাহোর-সহ একাধিক শহরে জনসাধারণ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে নিয়ে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দাবি করেন তাঁরা।
কিন্তু এরপর লাহোর পুলিশের প্রধান ওমর শেখ একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেন, যাতে করে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ওমর শেখ বলেন, “পুরুষ সঙ্গী ছাড়া ওই মহিলার গাড়ি নিয়ে রাস্তায় একা যাওয়া উচিৎ হয়নি।” এই মন্তব্যের পরেই প্রশাসনের মানুষিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। ২০২০ সালে থেকেও এই বর্বরতাকে না রুখে কিভাবে 'পুরুষতান্ত্রিক' এই মন্তব্য করলেন লাহোর পুলিশ প্রধান, উঠেছে সেই প্রশ্নই। যেখানে সারা বিশ্বে নারী-পুরুষ সমানাধিকারের কথা প্রকাশ্যে আসছে, সেখানে পাকিস্তানের রক্ষণশীলতা আজও আগের জায়গায় আটকে আছে। এরপরেই বিক্ষোভকারীরা পুলিশ প্রধান ওমর শেখের পদত্যাগ দাবি করেছে। যদিও এই ঘটনার তদন্ত করে ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে পাঞ্জাব পুলিশের তরফে এই ঘটনার তদন্তের জন্য ৬ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে ৭ জনের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।