Aajbikel

মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়ার উৎপাত! স্নানে নেমে পা-ও খোয়াতে হয়েছে মহিলাকে

 | 
bacteria

কলকাতা: ২০২৩ সালে দাঁড়িয়ে একটা কথা স্পষ্ট, রোগের কোনও শেষ নেই। বিভিন্ন ভাইরাস থেকে শুরু করে ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ নিয়ে এমনিতেই নাজেহাল সাধারণ মানুষ। ঠিক কোন কারণ থেকে কী রোগ ধরা পড়বে তা বলা এখন ভীষণ মুশকিল। আর এর মধ্যেই আতঙ্ক আরও বেশি পরিমাণে বাড়ে যখন অত্যাশ্চর্য কিছু রোগের কথা সামনে আসে। বেশি অবাক হতে হয় সেই রোগের মূল কারণ জানার পর। ঠিক যেমন 'ভিব্রিও ভালনিফিকাস'। বিষয়টা ঠিক কী, তা জেনে নিন। 

যে অপরিচিত শব্দ দুটি সম্পর্কে সম্প্রতি জানা গিয়েছে তা হল এক ধরনের মাংসখেকো বিরল ব্যাকটেরিয়া। আমেরিকায় এই ব্যাকটেরিয়ার হদিশ মিলেছে বলে খবর এসেছে। তবে শুরু হদিশ মেলেনি, ইতিমধ্যেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে এর কারণে। গবেষকরা বলছেন, যে ব্যাকটেরিয়ার জেরে কলেরা হয়, এই 'ভিব্রিও ভালনিফিকাস' সেই ব্যাকটেরিয়া পরিবারেরই সদস্য। আপাতত এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেকটিকাট ও নিউইয়র্কে ধরা পড়েছে। অনুমান করা হচ্ছে, সমুদ্রের জল থেকে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাই সিফুড খেয়েও অনেকে অসুস্থ হচ্ছে। এক গবেষণায় এও দাবি করা হয়েছে, আমেরিকায় সিফুড খেয়ে অসুস্থ হয়ে যতজন মারা যান তাদের মধ্যে অন্তত ৯৫ শতাংশই এই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত। 

গত কয়েকদিনের মধ্যে যে তিনজনের মৃত্যুর খবর এসেছে তাদের বয়স ৬০ থেকে ৮০-র মধ্যে। এদের মধ্যে সাঁতার কাটতে গিয়ে দু'জন এই ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হন, অন্যজন অয়েস্টার খেয়ে। তবে এই ঘটনা ছাড়াও আরও একটি ঘটনা বাহামা থেকে সামনে এসেছে যা আরও ভয়ঙ্কর। মাংসখেকো এক ব্যাকটেরিয়ার জন্য এক মহিলার পা বাদ দিতে হয়েছে! এমনকি তাঁর প্রাণ পর্যন্ত চলে যেত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। যদিও পা বাদ দেওয়ার পর আপাতত তিনি ভালো আছেন বলে জানা গিয়েছে। 

আটলান্টার বাসিন্দা জেনিফার বার্লো নামের এক মহিলা ছুটি কাটাতে বাহামায় গিয়েছিলেন। তিনি জানান, সেখানে তাঁর পা কোনও কারণে কেটে গিয়েছিল এবং তিনি তাই নিয়েই সমুদ্রে স্নান করতে নেমেছিলেন। এর কিছুদিন পর থেকেই বীভৎস অবস্থা হয়েছিল পায়ের। প্রথমে ভেবেছিলেন চোট থেকে কোনও সংক্রমণ হয়েছে। কিন্তু একদিন তিনি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পর যখন চিকিৎসক দেখান, জানতে পারেন তার পায়ের কাটার মধ্যে দিয়ে কোনও মাংসখেকো ব্যাকটেরিয়া শরীরে প্রবেশ করেছে। ক্রমশ শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল মহিলার। ওই ব্যাক্টেরিয়ার জন্য রক্তের মধ্যে সংক্রমণ একটু একটু করে ছড়াতে শুরু করেছিল। ক্রমে তাঁর কিডনি, লিভার বিকল হতে শুরু করে। 

অবশেষে ১২ বার অস্ত্রোপচার করার পর তাঁর পা বাদ দিতে হয় যাতে সংক্রমণ আর না ছড়াতে পারে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সমুদ্রের গভীরে এমন অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে তা শরীরে উন্মুক্ত জায়গা দিয়ে ঢুকে যায়। এটি ত্বকে একটা ক্ষত তৈরি করে। কখনও ফুলে গিয়ে ফুসকুড়ি ধরনের কিছু হয়, যা থেকে পরে আলসারও তৈরি হয়ে যেতে পারে। এতে আক্রান্ত হলে জ্বর হয়, ডায়ারিয়া হয়, পেটে ব্যথা হয়, বমিও হয়। এখন এই মহিলার পরিস্থিতির জন্যেও 'ভিব্রিও ভালনিফিকাস' দায়ী নাকি অন্য প্রজাতি, তা অস্পষ্ট। 

Around The Web

Trending News

You May like