মস্কো: টানা সতেরো দিন ধরে রক্ত ঝরছে ইউক্রেনে৷ কিয়েভ দখলে মরিয়া পুতিন বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়েছে নতুন উদ্যমে৷ লাগাতার চলছে বোমা বর্ষণ৷ সাঁজোয়া গাড়িতে বসানো ‘বিএম-২১ গ্রাদ’ রকেট ছোড়া হচ্ছে কিয়েভে পূর্বনির্দিষ্ট নানা লক্ষ্যে। এদিকে যুদ্ধ বিরতি নিয়ে এখনও ঐক্যমতে পৌঁছতে পারেনি রাশিয়া ও ইউক্রেন৷ চারবার আলোচনার টেবিলে বসেও মেলেনি রফা সূত্র৷ গতকাল বৈঠকে বসেছিলেন দুই দেশের বিদেশমন্ত্রী৷ সেই বৈঠকও ব্যর্থ৷ উল্টে কিয়েভের দাবি, আজ থেকে আরও জোরাল হয়েছে রুশ বাহিনীর আক্রমণ৷ শুধু তাই নয়, রাশিয়া ‘নিষিদ্ধ অস্ত্র’ ব্যবহার করে চলেছে বলেও অভিযোগ৷
আরও পড়ুন- তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যেতে পারে! বাইডেনের মন্তব্যে আশঙ্কার ঝড়
এ বিষয়ে ক্রেমলিন কিছু বলার আগই ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে আজ একটি টুইট করা হয়েছে৷ তাতে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়া নাকি তাদের জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের উপর ‘টিওএস-১এ অস্ত্র ব্যবস্থা’ প্রয়োগ করেছে৷ ভয়ঙ্কর অস্ত্রে মূলত ‘থার্মোবারিক রকেট’ বা ‘ভ্যাকিউম বোমা’ ব্যবহার করা হয়৷ যা অন্য যে কোনও বোমার চেয়ে বহু গুণ বেশি বিধ্বংসী৷ সেই প্রেক্ষিতে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের টুইটে বলা হয়, ‘‘রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক নিশ্চিত ভাবে জানিয়েছে, তারা টিওএস-১এ অস্ত্রের প্রয়োগ করেছে।’’ সেই সঙ্গে ‘#স্ট্যান্ডউইথইউক্রেন’ লিখে এই অস্ত্র সম্পর্কে একটি ভিডিয়োও শেয়ার করা হয়েছে৷
রাশিয়া যে থার্মোবারিক রকেটের প্রয়োগ করছে, আগেই সেই দাবি করেছিল ইউক্রেন৷ একই অভিযোগ করেছিলেন, ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওকসানা মারকারোভা৷ আজ একই অভিযোগ করল ব্রিটেন৷ কিন্তু প্রশ্ন হল, রাশিয়া কি সত্যিই ব্রিটেনের কাছে থার্মোবারিক রকেটের প্রয়োগের কথা স্বীকার করেছে? ব্রিটেনের এই টুইটকে সহজ ভাবে নিচ্ছেন না অনেকেই৷ রাশিয়াকে চাপে ফেলতে এটা ব্রিটেনের কোনও কৌশল কিনা, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে৷
ভ্যাকিউম বোমা বা থার্মোবারিক রকেট হল এমন এক ধরনের বিস্ফোরক, যা প্রথমে আশপাশের অক্সিজেন শুষে নিয়ে প্রচণ্ড উত্তাপ তৈরি করে৷ এর পরে বিস্ফোরণ ঘটায়। সেউ সঙ্গে একটি প্রকাণ্ড বিস্ফোরণ তরঙ্গ তৈরি হয়, যার প্রভাব সুদূরপ্রসারী৷ একে এরোসল বোমাও বলা হয়ে থাকে। এই রকেট হামলার প্রথম ধাপে, এরোসল বা ধূলিকণা তৈরি হয়। যার মধ্যে থাকে কার্বনের জ্বালানি ও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ধাতব কণা। দ্বিতীয় ধাপে, জ্বলে ওঠে একটা গ্যাসীয় পিণ্ড৷ প্রবল কম্পন তরঙ্গ আশপাশের বাতাস থেকে অক্সিজেন টেনে নিয়ে হঠাৎ করে ভ্যাকিউম বা শূন্য স্থান তৈরি করে। আর এর ঠিক পরেই ঘটে বিস্ফোরণ৷ যার পরিণতি হয় ভয়ঙ্কর৷
সেই সঙ্গে কিয়েভের দখল নিয়ে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চলছে এমনকী ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাতেও বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে৷ ‘মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম’ (এমএলআরএস) ভয়াবহ ক্ষতি করছে৷ বিস্ফোরণের জেরে বহু সাধরণ নাগরিকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ তিন দিক দিয়ে কিয়েভকে ঘিরে ফেলেছে রুশ ট্যাঙ্ক৷ গ্রাদ-এর ৫০০ মিটার- ২০ কিলোমিটার পাল্লার মডেলগুলির সাহায্যেই খারকিভ সহ খেরসন, মারিয়ুপোল-সহ কয়েকটি শহরে যুদ্ধ চালাচ্ছে পুতিন বাহিনী।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>