নিউইয়র্ক: সব ধর্মের ওপর আক্রমণের বিরোধিতা করছে না রাষ্ট্রসংঘ, এই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে ভারত। এমনকি রাষ্ট্রসংঘের সদস্য দেশগুলোর কাছে ভারতের তরফে বার্তা দেওয়া হয়েছে, নির্দিষ্ট ধর্মের হয়ে নয়, সব ধর্মের ওপর আক্রমণের বিরোধিতা করতে হবে সকলকে। ৭৫ তম ইউনাইটেড নেশনস জেনারেল অ্যাসেম্বলি বা ইউএনজিএ-তে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছেন ভারতের কূটনীতিবিদ আশিস শর্মা।
শান্তির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, গোটা বিশ্বে ১.২ বিলিয়ন হিন্দু, ৫৩৫ মিলিয়ন বৌদ্ধ, ৩০ মিলিয়ন ধর্মাবলম্বী মানুষ রয়েছেন। তা সত্ত্বেও নির্দিষ্ট ধর্মের ওপর আক্রমণের বিরোধিতা করা হচ্ছে। এটা হওয়া একেবারেই উচিত নয়। শুধুমাত্র একটা ধর্মের ওপর আক্রমণের বিরোধিতা করে গোটা বিশ্বে শান্তি আনা সম্ভব নয়। যে বিশ্বে এই ধরনের দ্বিচারিতা থাকে, সেই বিশ্বে কখনো শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদস্যরা নির্দিষ্ট ধর্মের উপর আক্রমণের বিরোধিতা করছে, কিন্তু আফগানিস্থানে গুরুদুয়ারায় আক্রমণ, যেখানে ২৫ জন ধর্মাবলম্বী মানুষ মারা গিয়েছেন, সেই ঘটনার বিরোধিতা করা হচ্ছে না। এ কিভাবে হিন্দু এবং বৌদ্ধ একাধিক মন্দির ধ্বংসের ঘটনা ঘটলেও সেই ইস্যুতে কোন রকম মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে না রাষ্ট্রসংঘের সদস্য বৃন্দদের। এই প্রেক্ষিতে ভারতীয় কূটনীতিবিদ স্পষ্ট জানান, হিন্দু, বৌদ্ধ এবং শিখ ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধে যে সন্ত্রাস এবং আক্রমণ হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে বিরোধিতা তো দূর, একটা শব্দ খরচ করা হচ্ছে না।
এই প্রেক্ষিতে কথা বলতে গিয়ে তিনি আরো বলেন, ভারত শুধু হিন্দু, বৌদ্ধ শিখ ধর্মের জন্ম হয়নি, সেখানে ইসলাম, খ্রিস্টান ধর্মের মানুষজনও সমান ভাবে বসবাস করেন। স্বামী বিবেকানন্দের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, স্বামীজি বলেছিলেন, ভারত বিশ্বাস করে, সব ধর্ম সত্যি এবং সব ধর্মের ওপর আক্রমণের বিরোধিতা আবশ্যিক। এর আগে, জাতিসংঘের রেজোলিউশন এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলি নির্দিষ্ট ধর্মের ওপর আক্রমণের বিরুদ্ধে বিরোধিতা করেছিল, ইসলামফোবিয়া, ইহুদিবাদবিরোধী ও খ্রিস্টানফোবিয়ার নামকরণ করেছে, যদিও বিশ্বব্যাপী অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলায় একই ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে।