বেজিং: ফের চড়তে শুরু করেছে চিন এবং তাইওয়ান সম্পর্কে উত্তেজনার পারদ৷ গত এক বছরে তাইওয়ান নিয়ে কড়া অবস্থান নিয়েছে চিন৷ ইতোমধ্যে মার্কিন ‘হস্তক্ষেপে’ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে৷ এবার বছর শেষে আরও একবার তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক ‘আগ্রাসন’ শুরু করল চিন। গত ২৪ ঘণ্টায় তাইওয়ানের দিকে ৭১টি যুদ্ধজাহাজ ও ৭টি জাহাজকে পাঠিয়েছে বেজিং। এগুলোর মধ্যে কিছু জাহাজ ইতিমধ্যেই তাইওয়ান প্রণালী পেরিয়ে গিয়েছে বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমগুলির একাংশের দাবি৷
আরও পড়ুন- ৮-১০ ফুট পুরু বরফের আস্তরণ রাস্তায়! ‘বম্ব সাইক্লোন’ প্রাণ কাড়ল বহু মানুষের
গত শনিবারই সামরিক খাতে ব্যয়বরাদ্দ আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আমেরিকা। তাইওয়ানের জন্য আলাদা করে অর্থবরাদ্দ করার কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল পেন্টাগনের তরফে। তাইওয়ান নিয়ে আমেরিকার এই সিদ্ধান্ত একেবারেই ভাল চোখে দেখছে না চিন। রবিবার রাতেই চিনা সেনার পূর্বাঞ্চলীয় কম্যান্ডের মুখপাত্র শি ই একটি বিবৃতি দিয়ে জানান, তাইওয়ানকে নিয়ে আমেরিকার এই প্ররোচনা ভাল ভাবে নিচ্ছে না বেজিং। এর পরেই তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে সামরিক টহলদারি এবং সামরিক মহড়া চালানোর কথা ঘোষণা করেন তিনি।
তাইওয়ানের অভিযোগ, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৭টি যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। এই যুদ্ধবিমানের মধ্যে রয়েছে ১৮টি জে-১৬, ১১টি জে-১, ৬টি সু-৩০ বিমান। এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টা ধরে আরও কিছু চিনা বিমান তাইওয়ানের আশেপাশে আকাশে চক্কর কেটেছে৷
তাৎপর্যপূর্ণভাবে শি ই-র এই বক্তব্যের আগে থেকেই কিন্তু তাইওয়ানের উদ্দেশে যুদ্ধজাহাজ পাঠাতে শুরু করেছিল শি জিনপিং-এর দেশ। চিন ও তাইওয়ানের মধ্যে সম্পর্কের এই টানাপোড়েন বেশ পুরনো৷ তাইওয়ানকে অখণ্ড চিনের অংশ বলে মনে করে বেজিং৷ অন্যদিকে তাইওয়ানকে স্বতন্ত্র দেশ বলেই মর্যাদা দেয় আমেরিকা। এই অবস্থায় নিজেদের সামরিক বাজেটে তাইওয়ানের জন্য অর্থ বরাদ্দ করার সিদ্ধান্তকে বেজায় খাপ্পা চিন৷ আমেরিকার এই পদক্ষেপকে সার্বভৌমত্বে ‘হস্তক্ষেপ’ বলে মনে করছে চিন। তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে আমেরিকার এই ‘মদতে’র সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই তাইওয়ানকে ঘিরে সামরিক মহড়া চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় চিন। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে তাইওয়ানও৷
গত অগস্ট মাসেও আমেরিকার হাউস অফ রিপ্রেজ়েন্টিটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরকে নিয়ে উত্তপ্ত হয়েছিল চিন ও আমেরিকার সম্পর্ক। সে সময়ও এক মাসের বেশি সময় ধরে তাইওয়ান প্রণালী ধরে সামরিক মহড়া চালিয়ে গিয়েছিল চিন।