কোনও দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে না, নজরদারি জাহাজ নিয়ে সাফাই চিনের

কোনও দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে না, নজরদারি জাহাজ নিয়ে সাফাই চিনের

বেজিং: ভারতের আপত্তি উপেক্ষা করেই মঙ্গলবার সকালে শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দরে নোঙ্গর ফেলেছে চিনা নজরদারি জাহাজ ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভারত এবং চীনের মধ্যেকার সম্পর্কের পারদ আরো কিছুটা চড়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই ভারতের আপত্তি উড়িয়ে শ্রীলঙ্কার সমুদ্র উপকূলে এভাবে চিনা জাহাজ নোঙর ফেলায় অসন্তুষ্ট ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। এমতাবস্তায় সম্পর্ক বাঁচাতে বুধবার সকালেই চীনের তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে একটি বিশেষ বিবৃতি। ওই বিবৃতিটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোন দেশের নিরাপত্তাতে বিঘ্ন ঘটাবে না চীনের উচ্চ প্রযুক্তির এই গবেষণা জাহাজ। এর সঙ্গেই ভারতের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়ে চিনা বিদেশ মন্ত্রকে তরফ থেকে বলা হয়েছে, এই বিষয়ে তৃতীয় পক্ষের কোন হস্তক্ষেপ উচিত নয়। স্বাভাবিকভাবেই তৃতীয় পক্ষ বলতে এখানে ভারত তথা ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকেই যে বোঝাচ্ছে চীন তা একপ্রকার স্পষ্ট।

 চীনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ইউয়ান ওয়াং ৫’ নির্বিঘ্নে হামবানটোটা বন্দরে নোঙর ফেলেছে। এই বিষয়ে সবরকম সাহায্য মিলেছে শ্রীলঙ্কার তরফে। এদিন দেশের জাহাজকে স্বাগত জানাতে বন্দরে উপস্থিত ছিলেন শ্রীলঙ্কায় চীনের রাষ্ট্রদূত। উল্লেখ্য, চিনের দেওয়া ঋণ শোধ করতে না পারায় ২০১৭ সালে হামবানটোটা বন্দরটিকে ৯৯ বছরের জন্য লিজ নিয়েছে চীন। সেখানেই বিপদের আশঙ্কা। বন্দরটিকে কৌশলগতভাবে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হতে পারে বলেই মনে করছে দিল্লি। এর মধ্যেই হাজির হয়েছে চীনা জাহাজ। যদিও এদিন চীনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, ‘আমি আবারও জোর দিয়ে জানাতে চাই, ইউয়ান ওয়াং ৫’ জাহাজের সামুদ্রিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা কার্যক্রম আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে।’ এরপরই নাম না করে ভারতের উদ্দেশে চীনা মুখপাত্রের বার্তা, এটি কোনও দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থকে প্রভাবিত করবে না, অতএব তৃতীয় পক্ষের এই বিষয়ে নাক গলানো উচিত নয়।’

উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার সমুদ্র উপকূলে চীনের নোঙর করা জাহাজকে আসলে গবেষণা এবং সমীক্ষার কাজে ব্যবহার করছে বেজিং। নজরদারি সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছিল চীন। কিন্তু বেজিংয়ের এই দাবি মানতে রাজি নয় ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। ভারতের আশঙ্কা এই জাহাজের প্রচুর অত্যাধুনিক এবং শক্তিশালী সেন্সর এবং র‍্যাডার মজুদ রয়েছে, যার সাহায্যে ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপর ঘুরপথে নজরদারি চালাতে পারে লাল ফৌজ। ভারতের ইউনিটফরমেশন মিসাইল সাইট, যুদ্ধ জাহাজ এবং সাবমেরিনের সন্ধান পেতেই শ্রীলঙ্কার সমুদ্র উপকূলে ওই জাহাজের নোঙর ফেলেছে চীন। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + nineteen =